নিজস্ব সংবাদদাতা : পরিবেশ রক্ষার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সরকার আগে যে ঘোষণা করেছিল, অর্থাৎ ২০৩০ সালের পর নতুন পেট্রোল ও ডিজেলচালিত গাড়ি আর তৈরি করা যাবে না, সেই সিদ্ধান্ত এখনো বহাল আছে। তবে গাড়ি শিল্পের ওপর চাপ কমাতে এবং কর্মসংস্থান রক্ষা করতে সরকার এবার কিছু নিয়ম শিথিল করেছে।
/anm-bengali/media/media_files/2025/04/03/1000180672-117187.jpg)
রবিবার (৬ এপ্রিল) সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈদ্যুতিক গাড়ি (EV) উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গাড়ি নির্মাতারা এখন কিছুটা সময় ও সুযোগ পাবে। এর আগে নির্দিষ্ট বছরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে কোম্পানিগুলোকে প্রতি গাড়ির জন্য ১৫ হাজার পাউন্ড জরিমানা দিতে হতো। এখন সেই জরিমানা কমিয়ে ১২ হাজার পাউন্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি, এক বছরে কম উৎপাদন হলে পরের বছরে বেশি গাড়ি তৈরি করে তা পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগও থাকছে।
এছাড়া ছোট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যেমন অ্যাস্টন মার্টিন ও ম্যাকলরেনের মতো কোম্পানিগুলোকে ২০৩০ সালের পরও সীমিত আকারে পেট্রোল গাড়ি তৈরি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট ধরনের হাইব্রিড গাড়িও বাজারে রাখা যাবে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার সম্প্রতি জানিয়েছেন, জনগণকে বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনতে উৎসাহিত করতে সরকার ২.৩ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ে কর ছাড় এবং চার্জিং অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নিচ্ছে।
/anm-bengali/media/media_files/2025/04/05/eYZVcbGmwEYHk92P8xou.jpg)
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যা দেশটির জন্য বড় রপ্তানি বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এরই মধ্যে জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার ঘোষণা করেছে যে তারা এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি পাঠানো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখবে। সরকার বলছে, এই পরিবর্তনের মাধ্যমে তারা একদিকে যেমন পরিবেশবান্ধব পরিবহন নীতিতে অটল থাকছে, অন্যদিকে দেশের গাড়ি শিল্পকেও টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছে।
/anm-bengali/media/media_files/2025/04/03/1000180670-983771.jpg)
তবে বিরোধী দলগুলোর মতে, এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। কনজারভেটিভ নেতা কেমি বাদেনক দাবি করেছেন, "২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানো অসম্ভব।" লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলও বলছে, শুধু কোম্পানিকে ছাড় দিলেই হবে না, সাধারণ মানুষকে আরও বেশি উৎসাহিত করতে হবে যাতে তারা ইভি কেনার দিকে এগিয়ে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের এই নমনীয় সিদ্ধান্ত হয়তো সাময়িক স্বস্তি দেবে গাড়ি নির্মাতাদের, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সফল হতে হলে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন এবং অবকাঠামো উন্নয়ন, এই দুই দিকেই জোর দিতে হবে। পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই এই যাত্রা শুরু হয়েছে, তবে এবার সেই যাত্রার গতি যেন বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নেওয়া যায় এটাই চাইছে যুক্তরাজ্য সরকার।