নিজস্ব সংবাদদাতা: দাসপুরে একটি কাঠের সেতুর ভয়ানক অবস্থা দেখলে আঁতকে উঠতে হবে আপনাদের! সেতুর উপর থেকে আলগা হয়ে গিয়েছে কাঠের পাটাতন, ভারি যানবাহন তো দূরস্ত সাইকেল কাঁধে নিয়ে পারাপার করতে হয়। সেই বেহাল সেতু দিয়েই দীর্ঘ পাঁচবছর ধরে চলছে দুই জেলার একাধিক গ্রামের ঝুঁকির যাতায়াত। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসন বারে বারে সেতু মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা মেরামতে উদাসীন প্রশাসন। বিপদজনক কাঠের সেতু দিয়ে যাতায়াতে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর।
এমনই ভয়ানক কাঠের সেতু দেখলেই আঁতকে উঠবে যে কেউ। বিপদজনক সেই সেতু দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে নিত্য যাতায়াত করতে হচ্ছে দুই মেদিনীপুরের ৭-৮ টি গ্রামের বাসিন্দাদের। সেতু মেরামতে প্রশাসনের উদাসীনতায় ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের নন্দনপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভসরাখালের উপর পাইকানবোয়ালিয়া গ্রামের। পাইকানবোয়ালিয়া গ্রামে ভসরাখালের উপর থাকা কাঠের সেতুটি ভগ্নদশা, সেতুর উপর থাকা একাধিক কাঠের পাটাতন নেই, সেতুর উপর একাধিক জায়গায় বড়ো বড়ো ফাঁক তৈরি হয়েছে। তার উপর দিয়ে কার্যত ডিঙিয়ে পারাপার করতে হয়।
ভারি যানবাহন তো দুরস্ত, সাইকেল নিয়ে যাতায়াতের উপযুক্ত নয় এই কাঠের সেতু। সাইকেল কাঁধে নিয়ে সেতু পার হতে হয়। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার করতে গিয়ে যেকোনো সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দুর্ঘটনা যে ঘটেনি তা নয়, এই বেহাল সেতু পারাপার করতে গিয়ে আগে একাধিক দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
এই সেতুর উপর যাতায়াত একদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার সাহালাজপুর, গোপালহাজরা, রাধাবল্লভপুর, অপরদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরের পাইকানবোয়ালিয়া, চকসুন্দর, বিহরীচক, ধর্মা সহ আরও একাধিক গ্রামের নিত্য যাতায়াত। সন্ধ্যা নামলে এই সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত কার্যত বন্ধই হয়ে যায়। বিগত পাঁচ বছর ধরে এমনই বেহাল অবস্থায় রয়েছে এই কাঠের সেতুটির। স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসনে বারে বারে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে দাবি এলাকাবাসীর।
চলতি বছরের বন্যায় খালের জল বেড়ে সেতুটি তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তাকে কোনো রকমে আটকানো গেছে। বন্যায় আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই সেতুটি জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বেহাল সেতু মেরামতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি। দ্রুত বেহাল কাঠের সেতু মেরামতের দাবি তুলছেন এলাকাবাসী।
যদিও এবিষয়ে নন্দনপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দুলালচন্দ্র মন্ডল জানিয়েছেন, “সেতুর যা পরিস্থিতি মেরামতের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষে সম্ভব না। জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে যাতে দ্রুত সেতু মেরামত করা যায়”।
দীর্ঘ পাঁচ বছর ঝুঁকি নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে বেহাল সেতু পারাপার করতে হচ্ছে দুই মেদিনীপুরের একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের। কবে হবে সেতু মেরামত? কবে দুর্ভোগ কাটে দাসপুরের পাইকানবোয়ালিয়া সহ দুই জেলার বাসিন্দাদের এখন সেটাই দেখার।