নিজস্ব সংবাদদাতা : গাজায় এখন জীবন মানে শুধু বেঁচে থাকার লড়াই। এক মাস ধরে ইসরায়েল গাজার ওপর খাবার, জল, ওষুধ ইত্যাদি সব রকমের সহায়তা বন্ধ করে রেখেছে। এর মধ্যে চলছে ভারী সামরিক অভিযান। ফলে প্রায় ২০ লাখ মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।ইসরায়েল বলছে, তারা হামাসের ওপর চাপ দিতে এই অবরোধ করেছে, যাতে বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে—এই অবরোধে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে সাধারণ মানুষ, যারা কোনো যুদ্ধে নেই, শুধু নিজেদের ঘরবাড়ি আর পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়।
/anm-bengali/media/media_files/2025/04/07/1000182986-120224.jpg)
এখন গাজার রাস্তায়, পার্কে, এমনকি ভাঙা ভবনের নিচে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। কারও ঘরবাড়ি নেই, কেউ খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে। খাবার নেই, বিশুদ্ধ জল নেই। শহরের ৬০% মানুষ জল পাচ্ছেই না, আর রাস্তায় পড়ে আছে হাজার হাজার টন আবর্জনা।সব বেকারি বন্ধ, কারণ ময়দা ও গ্যাস নেই। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বলছে মার্চ মাসে এক মিলিয়নের বেশি মানুষ কোনো খাবার পায়নি। গাজার বাইরে ৮৯ হাজার টন খাবার ট্রাকেই আটকে আছে, কিন্তু তা ঢুকতে পারছে না। ফলে এক বস্তা ময়দার দাম চারগুণেরও বেশি বেড়ে গেছে।
হাসপাতালের অবস্থাও খুব খারাপ। রোগীর ভিড়ে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। অনেককে চিকিৎসা ছাড়াই ফেরত পাঠাতে হচ্ছে। ডাক্তারেরা এখন কেবল সেই মানুষদের অপারেশন করছেন যাদের বাঁচার সম্ভাবনা বেশি। বাকিদের জন্য শুধু অপেক্ষা কখন মৃত্যু আসে।সবচেয়ে কষ্টে আছে শিশুরা। ইউনিসেফ বলছে, গড়ে প্রতিদিন ১০০ শিশু মারা যাচ্ছে বা আহত হচ্ছে। অনেকে এক জোড়া কাপড়েই দিনের পর দিন ঘুরছে। কোনো ওষুধ, কোনো সাহায্য পৌঁছাচ্ছে না।
/anm-bengali/media/media_files/2025/04/07/1000182988-805256.jpg)
আগে আমেরিকার বাইডেন সরকার ইসরায়েলের ওপর কিছুটা চাপ দিচ্ছিল সহায়তা দিতে, কিন্তু এখন ট্রাম্প প্রশাসনের সময় সেই চাপও আর দেখা যাচ্ছে না।জাতিসংঘ বলছে, "মানুষ না খেয়ে মরছে, চারদিকে বিশৃঙ্খলা, নিরাপদ কোনো জায়গা নেই।" গাজার মানুষ এখন এক খণ্ড ছোট্ট ভূমিতে বন্দি। তারা শুধু বাঁচতে চায়। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে আরও বড় বিপর্যয় আসবে, এমনটাই মনে করছে বিশ্ব।