হরি ঘোষ, লাউদোহা : আনুমানিক আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর ধরে দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আমলৌকা গ্রামের ব্যানার্জি বাড়ির দুর্গা প্রাচীন প্রথা মতোই পূজিতা হয়ে আসছেন। বৈষ্ণব মতে পূজিতা হন এখানকার মা দুর্গা। তাই কোনও বলিদান প্রথা নেই। বর্তমানে ব্যানার্জি পরিবারের রয়েছেন ৫৭ জন সদস্য। তারাই নিজেদের প্রচেষ্টায় আজও পুজো চালিয়ে আসছেন। প্রাচীনকালে এই মায়ের মন্দির ছিল তালপাতার ছাউনির। গত ১৬ বছর আগে ব্যানার্জি পরিবারের সদস্যরা মন্দিরের নতুন রূপ দেয়। বর্তমান ব্যানার্জি পরিবারের সদস্য করুণাময় ব্যানার্জি জানান, আনুমানিক আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে তাদের বংশের প্রাণপুরুষ রামযাদব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম শুরু করেন এই দুর্গাপুজো। এমনই কথিত রয়েছে। আমলৌকা গ্রামের ব্যানার্জি বাড়ির দুর্গা বড় দুয়ারের দুর্গা নামেও পরিচিত এলাকায়। পুজোর চার দিন ব্যানার্জি পরিবারের সমস্ত সদস্য একসাথে খাওয়া দাওয়া ও আনন্দ উৎসবে মেতে থাকেন। এখানে দুর্গা পুজোয় এই একটি বিশেষ প্রক্রিয়া রয়েছে যা অন্য কোথাও সচরাচর দেখতেই পাওয়া যায় না। বলিদান প্রথা না থাকলেও এখানে একটি বিশেষ নাড়ু বলির প্রথা রয়েছে। মহা অষ্টমীর দিন হয় এই নাড়ু বলির প্রক্রিয়া। তবে নাড়ু বলির নামকরণ হলেও বলিদানে ব্যবহৃত হয় না কোনও রকম অস্ত্র। নিষ্ঠার সঙ্গে নাড়ু তৈরি করতে হয় পরিবারের সদস্যদেরই। লম্বা আকারের একটা নাড়ু তৈরি হয় সেটা একটা চন্দন পিঁড়ির ওপর রেখে দেওয়া হয় মায়ের সামনে। সঠিক সন্ধিক্ষণে নিজের থেকেই নাড়ু দ্বিখন্ডিত হয়ে যায় বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়। ব্যানার্জি পরিবারের দুর্গা মন্দিরের পাশেই রয়েছে শিব ও রাধা মাধবের মন্দির। বিগত ৪০০ বছর ধরেই নিয়মিত নিত্য পুজো চলে আসছে এখানে।