নিজস্ব প্রতিবেদন : আজ দশমী। বাংলার প্রতিটি প্রান্তে যেন বিষাদের সুর বেজে উঠেছে। কৈলাসে উমার ফিরে যাওয়ার সময়। ঘাটে ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। প্রতিটি মণ্ডপ যেন একেকটি ভক্তির প্রসাদ, যেখানে দেবীর প্রাপ্তি ও বিচ্ছেদের আবেগ মিশে রয়েছে।
সকাল থেকে মণ্ডপে শুরু হয়েছে সিঁদুর খেলা। মহিলাদের মধ্যে এক ধরনের উল্লাস এবং বিষাদ কাজ করছে। সিঁদুরের রঙে দেবীকে রাঙিয়ে তুলে তারা আনন্দে মেতে উঠছেন। সিঁদুর খেলার সময় তাদের মুখে হাসি, হাতে মিষ্টি। একে অপরকে কোলাকুলি করে, মিষ্টিমুখ করিয়ে প্রিয় দেবীর প্রতি সম্মান জানান। নিরঞ্জনের সময় দেবী দুর্গার প্রতিমার কাছে ভক্তরা ফুলের মালা ও ফল দিচ্ছে। মন্দির প্রাঙ্গণে ধুনো ও মিষ্টির সুবাস ভেসে আসছে। মাঝে মাঝে পুজারীদের গুঞ্জনে শোনা যাচ্ছে “উমা, উমা” ডাক। প্রতিমা যখন জল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন চোখে জল আসে অনেকের।
সকলেই জানে, দশমী মানে বিদায়ের সুর, কিন্তু এই বিদায়েও রয়েছে এক অপার প্রেমের গল্প। মা ফিরে যাচ্ছেন, কিন্তু হৃদয়ে তাঁর স্মৃতি চিরকাল বাস করবে। শেষের এ মুহূর্তগুলো যেন সৃষ্টির একটি বিশেষ অংশ, যেখানে উমার সঙ্গে মানুষের এক নিবিড় সম্পর্কের চিত্র ফুটে ওঠে।
এরপর প্রতিমা নদীতে বিলীন হতে চলেছে। যেন এক বার্তা, "আমি ফিরে আসব।" এই বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে বছরের পর বছর চলে আসছে এই উত্সব। কষ্টের এই ক্ষণটি সবার হৃদয়ে জাগ্রত করবে আশা, উমার পুনর্বার আগমনের। দশমী হল শুধু বিদায় নয়, এটি নতুন সূচনারও একটি চিহ্ন। মানব জীবনের চক্র, যেখানে প্রেম ও আত্মার সংযোগ সদা বিরাজমান।