নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রামঃ জঙ্গলমহলের মূলবাসীদের একটি প্রধান কৃষিসংস্কৃতি কেন্দ্রীক উৎসব হলো বাঁদনা। এই উৎসব সাধারণত কালীপূজা অমাবস্যার পরের দিন থেকে শুরু হয়। সাধারণতঃ তিন দিন চলে গো-বন্দনার এই উৎসব। কোথাও কোথাও চার-পাঁচদিন চলে এই বাঁদনা পরব। কালীপূজার পরের রাত থেকে থেকে জাগরণ শুরু হয়ে যায় প্রতিটি ঘরে ঘরে। এটি সারা রাত ধরে চলে।
বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র ও আহিরা গানের মাধ্যমে গরুকে জাগিয়ে রাখার কাজ চলে এদিন দুপুরে থেকে ঘটপূজা বা গঠপূজা করে গরুকে দিয়ে গরুর পায়ে ডিম ভাঙানো দিয়ে শুরু হয়। পরের দিন প্রতিটি বাড়িতে গোয়ালে গরুকে পূজা করারা সাথে সাথে চালের গুড়ি আর পাইনা লতা বেটে বাড়ির আঙিনায় আলপনা বা চোক পুরা দেওয়া হবে। তার পরের দিন গরুর খুটান অনুষ্ঠান হবে বিভিন্ন এলাকায়। এই তিন দিন ধরে জঙ্গলমহলে প্রতিটি বাড়ি উৎসবে মেতে উঠে। শুক্রবার রাত্রে ঠিক এভাবেই বাঁদনা উৎসবে মেতে উঠেছে জঙ্গলমহলের কুণ্ডলডিহি গ্রামের মানুষজন।
এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, বাঁদনা পরব বা বাঁধনা পরব ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলা, ঝাড়গ্রাম জেলা, বাঁকুড়া জেলা, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা এর কুড়মি, বাউরি, রাজোয়ার, সাঁওতাল, নাপিত, কুইরি, বাগাল, কুমহার, গোয়ালা, ভূমিজ, লোধা, বাগদি, মুন্ডা প্রভৃতি জাতির কৃষিভিত্তিক উৎসব। প্রতি বছর কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাত্রে অনুষ্ঠিত কালীপূজার পরদিন বাঁদনা পরব পালিত হয়ে থাকে। এই উৎসবে যে গান গাওয়া হয়, তাকে অহিরা গান বলা হয়।