নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেনমার্কের এখতিয়ারের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড কেনার কথা ঘোষণা করেছেন। এই বিষয়টি প্রথম জানাজানি হয় ২০১৯ সালে। তবে সেই সময় বিষয়টি নিয়ে এত আলোচনা না দেখা গেলেও, এবার এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন ট্রাম্প।
মার্কিন নিয়ন্ত্রণে গ্রিনল্যান্ডের বিষয়ে ট্রাম্পের উদ্দেশ্যের বিশদ বিবরণ সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট নয়। তবে মঙ্গলবার, তিনি বলেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের "অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য" পানামা খাল এবং গ্রিনল্যান্ড উভয়ই প্রয়োজন।
নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত গ্রিনল্যান্ড কেনার বিষয়ে চিন্তা করেছিলেন, তারপরে গত মাসে আবার আগ্রহ দেখিয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লিখেছেন, “সারা বিশ্ব জুড়ে জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার উদ্দেশ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন”।
এরপর মঙ্গলবার, ট্রাম্পের বড় ছেলে পর্যটক হিসাবে গ্রিনল্যান্ড সফর করেছিলেন। স্থানীয় প্রশংসকদের দ্বারা তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল। একটি ডেনিশ সংবাদপত্র এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, বিরল জনসংখ্যা সত্ত্বেও, গ্রিনল্যান্ডে পৃথিবীর বিরল খনিজগুলির সমৃদ্ধ মজুত থাকার কারণে প্রচুর ভূ-রাজনৈতিক মূল্য রয়েছে। এই খনিজগুলি জাতীয় প্রতিরক্ষা এবং সবুজ শক্তিতে রূপান্তরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আটলান্টিক এবং আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যে দ্বীপটির কৌশলগত অবস্থান এটিকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। এটি একটি বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিও হোস্ট করে, যা এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও আগ্রহী করে তোলে।
তবে এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়ার দিকে কোন ঝোঁক দেখাননি গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট বোরুপ এগেডে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে "গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডের জনগণের অন্তর্গত। এখানের সিদ্ধান্ত এখানকার জনগণই নেবে”।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এই অনুভূতির প্রতিধ্বনি করেছিলেন। তিনি জোর দিয়েছিলেন যে “গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়”। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ডেনমার্কের শক্তিশালী জোটের কথাও তুলে ধরেন। কিন্তু গ্রিনল্যান্ডের ভবিষ্যত সম্পর্কে সিদ্ধান্ত তার জনগণেরই নেওয়া উচিত বলে সেই কথায় বজায় রেখেছিলেন ফ্রেডেরিকসেন।
স্বাভাবিক ভাবেই বোঝা যাচ্ছে, যে ট্রাম্প চিন্তা করলেই সহজে গ্রিনল্যান্ড কিনতে পারবেন না। তাঁর জন্যে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরতে হবে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।