নিজস্ব প্রতিবেদন : আট দশক আগে আমেরিকার ফেলা একটি বোমা মাটির নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিল। এত বছর পর হঠাৎ তীব্র বিস্ফোরণ ঘটার কারণে জাপানের একটি বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গেল। জানা যাচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই বোমাটি ফেলা হয়েছিল। বিস্ফোরণের ফলে ট্যাক্সিওয়েতে বিরাট গর্ত তৈরি হয়েছে, যা বিমান চলাচলের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এই ঘটনার ফলে প্রায় ৯০টি বিমানের উড়ান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর ফলে যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ এবং ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বর্তমানে ঘটনাস্থলে জরুরি উদ্ধার কাজ শুরু করেছে এবং বিমান চলাচল পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
জাপানের মিয়াজাকি বিমানবন্দরে সম্প্রতি একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যা তীব্র উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। জানা গেছে, বিমানবন্দরের রানওয়ের পাশের ট্যাক্সিওয়েতে আচমকাই বিস্ফোরণ ঘটে, যা প্রথমে বিমানবন্দরের কর্মীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে। তাঁরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর স্তম্ভিত হয়ে যান, কারণ সেখানে একটি বিরাট গর্ত তৈরি হয়েছে, যার আয়তন প্রায় ২৩ ফুট এবং গভীরতা ৩.২ ফুট। জাপানের পরিবহণ মন্ত্রকও এই বিস্ফোরণের খবর নিশ্চিত করেছে। সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে মিয়াজাকি বিমানবন্দরে পৌঁছায় দেশের গ্রাউন্ড সেলফ ডিফেন্স স্টাফ এবং বম্ব স্কোয়াড। তদন্তে দেখা যায়, বিস্ফোরণটি আমেরিকার ফেলা একটি বোমা থেকে ঘটেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মাটির নীচে চাপা পড়েছিল। এই বিস্ফোরণ বিমান চলাচলে ব্যাপক বাধা সৃষ্টি করেছে, এবং কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
এই ঘটনায় কোনও প্রাণহানি ঘটেনি এবং কেউ আহত হওয়ার খবরও পাওয়া যায়নি, কিন্তু ঘটনার ভয়াবহতায় সবাই শিউরে উঠছেন। লাইভ ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ট্যাক্সিওয়ের যে জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটে, মিনিট দুয়েক আগে সেখানে একটি বিমান দাঁড়িয়ে ছিল। বিস্ফোরণের কিছু মুহূর্ত আগে বিমানটি সেখান থেকে বেরিয়ে যায়, যা আরও বেশি উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ঘটনার পরই রানওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং প্রায় ৯০টি বিমান বাতিল করা হয়। ট্যাক্সিওয়ের গর্তটি মাটি ভরে দিয়ে নতুন করে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। জাপান এয়ারলাইন্স (JAL), অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ (ANA) এবং অন্যান্য বিমান সংস্থার উড়ান পরিষেবা বাতিল রয়েছে, যার মধ্যে মিয়াজাকি থেকে টোকিও, ওসাকা এবং ফুকুওকা যাওয়ার বিমানও অন্তর্ভুক্ত।
মিয়াজাকি বিমানবন্দর জাপানের দক্ষিণ-পূর্বে কিউশু দ্বীপে অবস্থিত এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ লগ্ন পর্যন্ত এটি জাপানের নৌবাহিনীর ঘাঁটি ছিল। এখান থেকে 'কামিকাজে' অভিযান চালানো হতো। এর আগে এই বিমানবন্দর থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বোমাও উদ্ধার হয়েছে। জাপানের বিভিন্ন স্থানে এখনও অনেক পুরনো বোমা পাওয়া যায়, যেগুলির থেকে বিস্ফোরণ ঘটেনি। ২০২৩ সালে জাপানে মোট ২৩৪৮টি বোমা উদ্ধার হয়, যার মোট ওজন ছিল ৩৭.৫ টন, এই তথ্য প্রকাশ করেছে জাপানের সেল্ফ ডিফেন্স ফোর্সেস।