New Update
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাংলার দুই নক্ষত্রের নাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও মনু মুখোপাধ্যায়। তাঁরা দুজনেই আর নেই। তবে না থেকেও আছেন, বেঁচে আছেন ছবির দুনিয়ায়। আছেন সিনেমাপ্রেমীদের মনে। ২০২০ তে একই বছর, এক মাসের ব্যবধানে এই দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা। তবে আরও একবার তাঁরা ফিরছেন তাঁদের প্রিয় দর্শকদরবারে, সকলকে আরও একবার তাঁরা জানাবেন, এ জীবন ‘শুধু যাওয়া আসা’।
কলকাতা হাইকোর্টের অনুমোদনে কপিরাইট সমস্যা ও মিথ্যে কেসের বেড়াজাল কাটিয়ে মুক্তি পেতে চলেছে ‘শুধু যাওয়া আসা’। জানুয়ারি মাসের শুরুতেই মুক্তি পাচ্ছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও মনু মুখোপাধ্যায়ের শেষ ছবি, ‘শুধু যাওয়া আসা’। মনোজ মিত্রের লেখা এই ছবির গল্প সমস্ত বৃদ্ধ ব্যক্তিদের কথা বলবে, যাঁদের পৃথিবীতে কেউ নেই তাঁদের কথা বলবে। এই ছবির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬-১৭ সালে। তবে নানা কারণে ছবির কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। একজন পরিচালক ছবি শুরুর পর সবসময় একজন ভালো প্রযোজকের সন্ধান করেন। ঠিক তেমনই পরিচালক মণীশ ঘোষও একজন ভালো প্রযোজক খুঁজছিলেন।
শেষপর্যন্ত তিনি প্রযোজক পেলেও নানান সমস্যা তৈরি হয়েছিল। অভিযোগ, যে প্রযোজককে তিনি পেয়েছিলেন, তিনিও শুটিং শুরু করার কোনো ইচ্ছা দেখাচ্ছিলেন না। এদিকে ততদিনে শিল্পীদের ডেট নেওয়া হয়ে যায়। অগত্যা মনীশ ঘোষ নিজের সম্মান বাঁচাতে নিজের টাকাতেই শুটিং শুরু করেন। প্রযোজক আশ্বাস দেন পরবর্তী শুটিং শিডিউল শুরুর আগে সেই টাকা তিনি ফিরিয়ে দেবেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি রাখতেও ব্যর্থ হন ওই প্রযোজক। জানিয়ে দেন তিনি অপারগ। তাই ফের স্থগিত হয়ে যায় 'শুধু যাওয়া আসা'র শ্যুটিং। এরই মাঝে মনীশ ঘোষ এক অন্য এক প্রযোজককে খুঁজে পান এবং মনোজ মিত্রের সম্মতিতে প্রায় দুই বছরের ব্যবধানে ছবিটির শুটিং শুরু করেন। এরপর প্রথম প্রযোজক এসে ছবির কপিরাইট তাঁর বলে দাবি করেন। শুরু হয় জটিলতা। যদিও গল্পের লেখক কপিরাইট দ্বিতীয় প্রযোজককে দিয়েছিলেন।
অভিযোগ, প্রথম প্রযোজক শ্য়ুটিং শুরুর পরে ছবির সত্ত্ব (কপিরাইট) তাঁর বলে দাবি করেন এবং পরিচালকের কাছ থেকে মোটা টাকা চেয়ে বসেন। তবে নিয়ম অনুযায়ী ৫ বছর পার হয়ে যাওয়ায় ছবির সত্ত্বের মেয়াদ ততদিনে শেষ হয়েছিল। অর্থাৎ এক্ষেত্রে কোনওভাবেই প্রথম প্রযোজক গল্প তাঁর বলে দাবি করতে পারেন না। এদিকে মাঝে লকডাউনের কারণেও সমস্যা তৈরি হয়। ছবির শ্যুটিং শেষ হলেও টাকার অভাবে ফের ছবির মুক্তি আটকে যায়। অবশেষে পরিচালক মণীশ ঘোষ বি এন্টারটেইনমেন্টের বি. এল আগরওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁদেরই উদ্যোগে ছবিটি ২০২৩-এর ২৪ মার্চ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। ঠিক তখনই ফের আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন প্রথম প্রযোজক। তবে আদালত পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণের পর অবশেষে বি.এল আগরওয়ালকে ছবিটি মুক্তি ও প্রদর্শন করার অনুমতি দিয়েছে।