ব্যাঘ্র প্রকল্পে টহলদারিতে দেশে অষ্টম স্থান পেল আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প

author-image
New Update
ব্যাঘ্র প্রকল্পে টহলদারিতে দেশে অষ্টম স্থান পেল আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প

সুদীপ ব্যানার্জী, আলিপুরদুয়ার: নজির গড়ল আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প। ব্যাঘ্র প্রকল্পে টহলদারিতে গোটা দেশে অষ্টম স্থান দখল করল আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প। এই ক্ষেত্রে অসমের মানস ব্যাঘ্র প্রকল্পকেও অনেক পেছনে ফেলে  অষ্টম হয়েছে বি. টি. আর।জানা গিয়েছে ভারত সরকারের ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি এবং ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া সম্প্রতি গোটা দেশের উল্লেখযোগ্য ৩৫ টি ব্যাঘ্র প্রকল্পে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিল ও মে মাসে এই সমীক্ষা চালান হয়েছে। মূলতঃ লকডাউনের মাঝে এই সমীক্ষা চালান হয়।  জানা গিয়েছে এই সময় যখন বিভিন্ন বন লাগোয়া এলাকার শ্রমিকরা বাড়িতেই ছিলেন এবং জঙ্গলের উপর স্থানীয় মানুষরা রুটি রুজির জন্যে অনেক বেশি জঙ্গল-নির্ভর হয়ে উঠেছিলেন সেই সময় জঙ্গলে টহল কি অবস্থায় ছিল তা জানার জন্যই এই সমীক্ষা চালানো হয়। এই সমীক্ষাতে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের প্রশাসনের সফলতা ধরা পড়েছে। জানা গিয়েছে সমীক্ষা চলাকালীন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীরা মোট ৪৪৩২৫ কিলোমিটার পেট্রোলিং করেছেন। গাড়িতে ও পায়ে হেটে সমীক্ষা চলাকালিন এই পথ টহল দিয়েছেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বন কর্মীরা। যেখানে ২০২০-২১ সালে পায়ে হেটেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বন কর্মীরা ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৯৯ কিলোমিটার বনাঞ্চল টহল দিয়েছেন। এই টহলের সময় ব্যাবহৃত মোবাইল অ্যাপে টহলের বিস্তারিত রেকর্ড করা রয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এই সফলতায় খুশি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কতৃপক্ষ। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডাইরেক্টর বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন, " বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে নিরাপত্তা ব্যাবস্থাকে আমরা খুব গুরুত্ব দিই। এই সফলতা আমাদের সকলের।  এই সফলতার পর আমরা কাজ করার আরও উৎসাহ পাব।" জানা গিয়েছে ১৯৮২ সালে আলিপুরদুয়ার জেলার  বক্সার জঙ্গল বক্সা টাইগার রিজার্ভ হিসাবে স্বীকৃতি পায়। মোট ৭৬০ বর্গকিমি এলাকা জুড়ে বক্সা টাইগার রিজার্ভের ৪০০ বর্গকিমি এলাকা সংরক্ষিত জঙ্গল। বাকিটা বাফার এলাকা। শেষ ২০ বছরে এই জঙ্গলে সরাসরি বাঘেদের তেমন কোন অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়নি। সেই কারণে বাইরে থেকে বাঘ এনে এই বনাঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য বনদফতর।  বাঘ আনার কথা ভেবে এই বনাঞ্চলে বাইরে থেকে তিন দফায় হরিণ এনে ছাড়া হয়েছে। বাঘেদের খাদ্য সংস্থানের জন্য বাইরে থেকে হরিন এনে ছাড়া হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন ব্যাঘ্র সংরক্ষনে নিয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকরা প্রশিক্ষণও নিয়ে এসেছেন। তবে এই মুহুর্তে বক্সা বাঘ-বনে বাঘের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পরিবেশ প্রেমীরা। এই অবস্থায় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এই সফলতা বিশেষ গুরুত্বপূর্ন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।