নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ রাজ্যের মহিলাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যের স্বপ্নের প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর নামে এবার ক্লাব তৈরি করলেন গ্রামের মহিলারা। গ্রামের মহিলাদের নানা সমস্যা এবং তার সমাধান করা, মহিলাদের বিপদে-আপদে পাশে থাকা, বাল্য বিবাহ আটকানো, গ্রামের উন্নয়ন মূলক কাজে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুরুষদের সহযোগিতা করা এই ক্লাবের মূল লক্ষ্য। এমন ক্লাব তৈরি হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সনকাডাঙ্গা গ্রামে। মহিলাদের এমন উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন গ্রামের পুরুষরাও।
কংসাবতী নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান গ্রামটির। অধিকাংশ সাধারণ মধ্যবিত্ত, গরীব মানুষের বাস। গ্রামে মোট ৬৫ থেকে ৭০টি পরিবারের বসবাস। প্রায় সমস্ত পরিবারের মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আর্থিক সাহায্য পান। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাওয়ার পরেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এমন একটি ক্লাব গঠনের পরিকল্পনা করেছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামের মহিলারা। ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নামে মহিলাদের ক্লাবের পথচলা শুরু হলেও, কোনও ক্লাব গৃহ নির্মাণ এখনও হয়নি। আপাতত কোনও সদস্যার বাড়িতে বা স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খোলা বারান্দায় বসে বৈঠক, আলোচনা, পরিকল্পনা করছেন ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ ক্লাবের সদস্যারা। অদূর ভবিষ্যতে ক্লাব ঘর নির্মাণ, ক্লাবে মহিলাদের বিনোদন এবং ব্যবহার্য নানা সামগ্রী রাখার পরিকল্পনাও আছে।
ক্লাবের সদস্যা বানী গোয়ালা বলেন, " বাল্যবিবাহ আটকানো সহ মহিলাদের নানা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আমরা এই ক্লাব করেছি। প্রতিমাসে লক্ষ্মীর ভান্ডারে পাওয়া টাকার কিছু পরিমাণ আমরা চাঁদা হিসেবে দিই। কিন্তু সেই টাকায় ক্লাব ঘর নির্মাণ সম্ভব নয়। "
ক্লাবের নাম 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' কেন ? ক্লাবের সদস্যা রিতা তেওয়ারি বলেন, " রাজ্য সরকার সমস্ত মহিলাদের ১০০০ করে টাকা দিচ্ছে প্রতি মাসে। যা সংসারে খরচ বাদেও মহিলাদের নানা কাজে লাগছে। আর এই ক্লাব শুধু মহিলাদের। চাই আমরা গ্রামের মহিলারা কিছুটা স্বাবলম্বী হই। নিজেরা আলোচনা করে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নামে মহিলাদের একটি ক্লাব করার সিদ্ধান্ত নিই। গ্রামে নানা কাজ করার পাশাপশি একটি শিব মন্দির তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। " তবে বছর পেরিয়ে গিয়েছে ক্লাবের। এখনো ক্লাব ঘর নির্মাণ হয়নি আর্থিক অনটনে। প্রতিমাসে নিজেদের দেওয়া চাঁদা বাদেও অন্যান্য মানুষজনের কাছেও সাহায্য চেয়েছেন। সকলের সাহায্য নিয়ে মহিলাদের জন্য কিছু কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। গ্রামের পুরুষেরাও মহিলাদের এমন ক্লাব তৈরির পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়েছে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রাজেন গোয়ালা বলেন, " আমরা মহিলাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছি। গ্রামের মহিলারা এমন কাজে এগিয়ে আসলে আমাদের অনেক কাজ কমে যাবে। গ্রামে আরও উন্নয়ন হবে। ওরা খুব উদ্যম নিয়ে কাজ শুরু করেছে। বাল্যবিবাহ বা বাড়ির অভ্যন্তরের নানা খবর মহিলাদের কাছেই আগে থাকে। সে ক্ষেত্রে সমাধান করতে অনেক সুবিধা হবে। "