নিজস্ব প্রতিনিধি: এবার আসছেনা বাংলাদেশ থেকে বিশেষ ট্রেন। ফলে মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদে উরুষ উৎসব শুরু হচ্ছে রবিবার থেকে বাংলাদেশের পুণ্যার্থী ছাড়াই। গত বছরও বাংলাদেশের ট্রেন এসেছিল। এবারে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পরিস্থিতি সঠিক নেই। বাংলাদেশে হিন্দুদের মারধর, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে একাধিক স্থানে। পরিস্থিতি উত্তেজিত থাকায় আসছে না বাংলাদেশের ট্রেন। তবে স্থানীয়দের ভিড় গতবারের থেকেও বেশি হওয়ার আশঙ্কা করছেন মেলা কমিটি। বৃহস্পতিবার মেলার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হলো মেদিনীপুর পৌরসভায়। উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালি থানার আইসি, পৌরসভার পৌরপ্রধান সৌমেন খান সহ মেলা কমিটির লোকজন। কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৬ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলবে। বাংলাদেশের ট্রেন আসছে না। স্থানীয়দের ভিড় গতবারের থেকে অনেকটাই বেশি হবে। সেই মতো সমস্ত আয়োজন করা হয়েছে। নিরাপত্তা থেকে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ইসলামের যে ধারাটি শান্তি-সম্প্রীতি ও মানব-কল্যাণের আদর্শকে প্রকৃতভাবে তুলে ধরে সেটি হল সুফি ঘরানা। শ্রেষ্ঠ সুফি তরিকা কাদেরিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা গওসুল আযম আব্দুল কাদের জিলানী আল বাগদাদী পাক যিনি 'বড় পীর সাহেব' নামে পরিচিত। তারই ১৯ তম বংশধর তথা উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুফি সাধক হযরত সৈয়দ শাহ মুরশেদ আলী আলকাদেরী আলবাগদাদী পাকের ১২৪ তম বার্ষিক উরুষ উৎসব পালিত হচ্ছে মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদ, তৎ-সংলগ্ন মাজার পাক, দায়রাপাক ও ইস্ত্রীগঞ্জ পাকে। জানা গিয়েছে, ১৮৫২ সালের ১৬ জুলাই 'মওলা পাক' জন্মগ্রহণ করেন। 'মওলা পাকের' ভক্ত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছেন। পূর্ববঙ্গে অসংখ্য ভক্ত থাকার কারণে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের রাজবাড়ী জেলা থেকে একটি রিজার্ভ ট্রেন প্রতি বছর উরুষ উৎসবে মেদিনীপুর আসতে শুরু করে ১৯০২ সাল থেকে। পরবর্তীতে কয়েকটি রিজার্ভ বাসযোগেও পুণ্যার্থীরা আসতে শুরু করেন। তবে এবছর আসছে না। মেদিনীপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, "প্রতিবারই বাংলাদেশ থেকে পুণ্যার্থীরা আসত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় তারা আসছে না। আমাদের দেশের নানা প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা আসবেন। তাদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য সমস্তরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের থাকার ব্যবস্থা, পানীয় জল, ওষুধ, আলো, শৌচাগার সমস্তটা পৌরসভা থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে। উরুষ উৎসব সুন্দর ভাবে করার জন্য আজ বৈঠক হয়েছে।"