অকাল বর্ষায় আলু চাষিদের মাথায় হাত

এদিকে চাষীদের দাবি,চড়া দামে আলু বীজ ও রাসায়নিক সার কিনে চাষ করতে গিয়ে বিঘা প্রতি ৪০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান মূল্য ৫০০ টাকায় বিক্রি করে খরচটাও উঠবেনা।

author-image
Jaita Chowdhury
New Update
BKHAGCHB

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা: একেই দাম নেই। আলু কেনায় অনিহা ব্যবসায়ীদের। তার উপর অসময়ের বৃষ্টিতে দুঃশ্চিন্তায় কৃষকরা। দিনভর মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। সূর্যের দেখা নেই। দমকা ঝড়। সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টিতে আলু জমিতে জমেছে জল। রয়েছে পচনের আশঙ্কা। বৃষ্টির জেরে আলু খুলেও তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কোথাও প্যাকেট অবস্থায় জমিতে পড়ে। আবার কোথাও মাঠেই গাদ দেওয়া অবস্থায় ভিজছে আলু। সব মিলিয়ে আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনায় চরম বিপাকে চন্দ্রকোনার আলু চাষীরা। জমিতে বৃষ্টির জল জমে আলুর ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে মাঠে কোদাল হাতে জল কাটাতে ব্যস্ত কৃষকরা।

বৃহস্পতিবার এমনই ছবি দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায়। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিলই। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই অন্ধকারাচ্ছন্ন মেঘলা আকাশ, সূর্যের দেখা নেই। চন্দ্রকোনার বিস্তীর্ণ এলাকায় কোথাও মাঝারি, আবার কোথাও ভারি বৃষ্টি দফায় দফায়। সঙ্গে দমকা হাওয়া।শীতের শেষ লগ্নে আবহাওয়ার এহেন পরিবর্তনে চরম দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে চন্দ্রকোনার আলু চাষীরা।  

Potato

জেলায় 'আলু চাষের ঘর' হিসাবে পরিচিত চন্দ্রকোনা। এসময় মাঠ থেকে জলদি তথা পোখরাজ আলু তোলা চলছে। নতুন আলুর দাম নেই। এবছর এখনও পর্যন্ত মাঠ থেকে আলু কেনায় তেমন আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। আলুর দাম বর্তমানে প্রায় কুইন্টাল প্রতি ৫০০ টাকা অর্থাৎ এক বস্তা(৫০ কেজি) আলুর দাম ২৫০ টাকা।

এদিকে চাষীদের দাবি,চড়া দামে আলু বীজ ও রাসায়নিক সার কিনে চাষ করতে গিয়ে বিঘা প্রতি ৪০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান মূল্য ৫০০ টাকায় বিক্রি করে খরচটাও উঠবেনা। অনেকেই মহাজন বা সমবায় থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছে। তাদের ঋণ পরিশোধ করাই দুষ্কর হয়ে দাঁড়াবে। এসব দুঃশ্চিতার মধ্যে 'খাড়ার উপর মোড়ার ঘা' হয়ে কৃষকদের দুঃশ্চিন্তা দ্বিগুণ বাড়িয়েছে অসময়ের বৃষ্টি।

potato farmers .jpg

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মেঘলা আকাশ সঙ্গে দমকা ঝড় ও বৃষ্টিতে জমিতে পোখরাজ আলু ভিজেছে। আলু তোলার সময় হয়ে যাওয়ায়, মাঠ থেকে আলু তোলা শুরু করেছে কৃষকরা। বৃষ্টির জেরে আলু তোলায় বিঘ্ন ঘটেছে। নতুন আলু জমি থেকে খুলে কেউ কেউ প্যাকেট করলেও, উদ্ধার করে বাড়ি অবধি আনতে পারেনি অনেকেই। মাঠেই গাদ দিয়ে ত্রিপল চাপা দিয়ে ফিরে এসেছে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে মাঠে পড়ে থাকা সদ্য খোলা আলু ভিজে তা পচে গিয়ে চরম ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে কৃষকদের।

এছাড়াও যেসব কৃষক দাম না থাকায় এখনও আলু খোলা শুরু করেনি, বৃষ্টিতে ভিজেছে সেই আলু। বৃষ্টির জল জমা ঠেকাতে কোদাল হাতে নালা কাটাতে দেখা গেল কৃষকদের। তাদের দাবি,বৃষ্টির জমা জলে আলু পচে নষ্ট হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে বৃষ্টিতে আলু জমি ভিজেছে। আরও বৃষ্টি হলে মাঠেই পঁচে নষ্ট হবে আলু আশঙ্কায় কৃষকরা। 

কৃষকদের দাবি,জ্যোতি আলু মাঠ থেকে তুলতে এখনও দিন পনেরো কুড়ি সময় রয়েছে। সেই জমিতেও অনেক জায়গায় বৃষ্টির জল জমেছে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে জ্যোতি আলুর ডুবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বলা বাহুল্য অসময়ের বৃষ্টিতে চরম বিপাকে কৃষকরা। দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে আলু চাষ করে চরম ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে কৃষকদের।

Farming