নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: সরকারি দোকানঘর বন্টনকে ঘিরে বিতর্ক চন্দ্রকোনায়। চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড বাজারে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির তৈরি একাধিক দোকানঘর বন্টন হলেও বছরের পর বছর অধিকাংশ গুদাম ঘর বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে হাতেগোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী দোকানঘর ভাড়া নিয়ে বসলেও অধিকাংশ দোকানঘর বন্ধ থাকায় পুরোদমে চালু হচ্ছে না মার্কেট কমপ্লেক্স। ভাড়ার টাকা উঠছে না, দাবি ব্যবসায়ীদের। বেহাল পরিকাঠামোর সাথে সরকারি দোকানঘর বন্টনের পরও চালু না হওয়ায় ক্রেতাহীন মার্কেট কমপ্লেক্স। সরকারি দোকানঘর বন্টনে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব ব্যবসায়ী থেকে বিরোধীরা। ফাঁকা মার্কেট চত্বর মদ-জুয়া থেকে অসামাজিক কার্যকলাপের আড়ত হয়ে ওঠায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসীও।
ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড মার্কেটের। চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড মার্কেট। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির প্রধান বাজার চত্বর চন্দ্রকোনার রেগুলেটেড মার্কেট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি সংস্থাও বটে। চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড মার্কেট জেলার মধ্যে সবথেকে বড় এবং অন্যতম মার্কেট। এই মার্কেট চত্বরে খুচরো, পাইকারি সবজি শেড থেকে একাধিক গুদাম ঘর, সবজি স্টোর পর্যন্ত রয়েছে। এই মার্কেটে রয়েছে বহু দোকানঘর এবং ২০১৯ সালে এই মার্কেটের সাথে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে কৃষক বাজারও। জানা গেছে, মোট ২২৯টি সরকারি দোকানঘর রয়েছে। ২০১৯ সালে কৃষক বাজারের সাথে নতুন ৮৪টি দোকানঘর তৈরি করে লটারির মাধ্যমে সেগুলি বন্টনও করা হয়। জেলা রেগুলেটেড মার্কেটিং কমিটির হাতে চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও মার্কেট পরিচালনার জন্য স্থানীয় স্তরে সাব কমিটি রয়েছে যেখানে বিডিও, পৌরসভার চেয়ারম্যান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিধায়কসহ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিকরা কমিটির সদস্য হিসাবে রয়েছেন। কিন্তু এই কমিটির সভাও অনিয়মিত আর তাতে সমস্যায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, সরকারি দোকানগুলির মাসিক ভাড়া ৪০০ টাকা। সাথে বিদ্যুৎ বিলটাও মেটাতে হয় ব্যবসায়ীদের। প্রশাসন উদ্যেগ নিয়ে সব দোকানগুলি খোলার ব্যবস্থা করুক না হলে তাদের দোকানে তালা পড়ে যাবে ক্রেতার অভাবে এমনটাই জানাচ্ছেন দোকান নিয়ে বিপাকে পড়া ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, কয়েকজন নিয়মিত দোকান খুলে বসলেও অধিকাংশ স্টল বন্ধ থাকে। সরকারি দোকান নিয়ে অনেকে অন্যত্র ব্যবসা করছেন আবার অনেকে দোকান নিয়ে গুদাম ঘর করে তালা দিয়ে ফেলে রেখেছেন।ব্যবসায়ীরা এমনও অভিযোগ তুলছেন যে যাদের দোকান ঘর প্রয়োজন তারা আবেদন করেও পাননি অথচ অনেক ব্যক্তির নামে একাধিক ঘর বন্টন হয়েছে। তাদের কেউই এখানে দোকান নিয়েও তা ব্যবসার জন্য খোলেননি। আবার এও অভিযোগ উঠছে যে এই সমস্ত সরকারি দোকান এমন অনেকের নামে বন্টন হয়েছে যারা মোটা টাকার বিনিময়ে অন্য কাউকে ভাড়া দিয়েছেন বা বিক্রি করে দিয়েছেন। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে সরকারি দোকানঘর বন্টনে অনিয়মের ক্ষেত্রে। একে হাতিয়ার করে আসরে বিরোধীরা। ব্যবসায়ীদের তোলা অভিযোগ সঠিক বলে দাবি তাদের। যদিও এই বিষয়ে চন্দ্রকোনা রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির তরফে কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। এখন দেখার মার্কেট কর্তৃপক্ষ বা মার্কেট পরিচালনায় সাব কমিটির ঘুম ভাঙে কিনা।