নিজস্ব সংবাদদাতা: স্বাধীনতা দিবসের লড়াইটা এক-দুদিনের ছিল না। ২০০ বছরের পরাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল সেই লড়াই। ফলে কারোর একার পক্ষে সেই লড়াই চালিয়ে নিয়ে যাওয়া কখনোই সম্ভব ছিল না। যদি না সেই সময় ঘরে ঘরে গর্জে উঠত সকল দেশবাসী। ফলে ভারতে স্বাধীনতা এনে দিতে কাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি ছিল, সেই প্রশ্ন করা হলে এর উত্তর হবে একটাই। এই লড়াই ছিল দেশের, তাই দেশের প্রত্যেকটা মানুষই ছিলেন Freedom Fighter। আর আজ আপনাদের বলবো বাংলার বীরভূমি, বীর যোদ্ধাদের যে জায়গা অর্থাৎ বীরভূম, সেই বীরভূমের বীরাঙ্গনাদের কথা। যাদের লড়াই ছাড়া স্বাধীনতা আসা, একটু কষ্টকরই হয়ে উঠতো বাংলার জন্যে।
১৯৪২ এর অসহযোগ আন্দোলনে বোলপুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহধন্যা রানি চন্দের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মেদিনীপুরে জন্ম হওয়া স্বত্ত্বেও শান্তিনিকেতনে পড়তে এসে বীরভূমকে আঁকড়ে ধরেন তিনি। ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল রাঢ়বঙ্গের মাটিতে।
লাল মাটিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা এলে সন্ধ্যারানি সিংহের নাম আসবে স্বাভাবিক ভাবেই। স্বামী লালবিহারী সিংহের অনুপ্রেরণায় কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। সেই তখন থেকেই স্বাধীনতার লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন সন্ধ্যারানি। ১৯৪১ সালের সত্যাগ্রহ আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল। স্বাধীনতার যোদ্ধাদের থাকা, খাওয়া সবকিছু নিজের হাতে ব্যবস্থা করতেন সন্ধ্যারানি।
১৯১৪ সালে ইনি ‘মাসিমা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। রডা কোম্পানির পিস্তল, কার্তুজ লুট করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন ‘মাসিমা’ ওরফে দুকড়িবালা চক্রবর্তী। নলহাটির ঝাউপাড়াতে ছিল শ্বশুরবাড়ি, বাপের বাড়ি দুই-ই। আর সেখান থেকেই দেশের জন্যে চালাতেন লড়াই। দুকড়িবালার বোনপো ছিলেন নিবারণ ঘটক। অস্ত্রলুট করতে গিয়ে দুজনেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে আর তদের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। স্বাধীনতার লড়াইয়ে দুকড়িবালাই ছিলেন অস্ত্র আইনে ধৃত প্রথম মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী।