মিষ্টি কুমড়ো চাষের পদ্ধতি

author-image
Harmeet
আপডেট করা হয়েছে
New Update
মিষ্টি কুমড়ো চাষের পদ্ধতি

নিজস্ব সংবাদদতাঃ মিষ্টি কুমড়ো এক প্রকার লতা জাতীয় গাছ। এর পাতাগুলো বড় এবং পাতা ও কাণ্ডে সাদা কোমল লোমাবৃত। ফল বড় গোলাকার এবং সাধারণত কমলা রঙের হয়ে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটা সবজি হিসেবে চাষ করা হয়। আমাদের দেশে চাষযোগ্য জমিতে ও বাড়ির আঙিনায় মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়। শুধু সবজি হিসেবে নয় মিষ্টি কুমড়া ও বীজে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ওষুধি গুণ। সামান্য ভাজা অবস্থায় মিষ্টি কুমড়ার বীজ বাদামের মতো সামান্য মিষ্টি স্বাদযুক্ত নমনীয় ও চর্বনযোগ্য খাদ্য।  মিষ্টি কুমড়োর জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু প্রয়োজন। তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে চলে গেলে গাছের দৈহিক বৃদ্ধির হার কমে যায়। পারিবারিক বাগানে কুমড়োর চাষ করতে হলে সুবিধাজনক স্থানে দু’একটি 'মাদায়' বীজ বুনে গাছ মাচা, ঘরের চাল কিংবা কোন গাছের উপর তুলে দেওয়া যেতে পারে। বাণ্যিজিক চাষের ক্ষেত্রে প্রথম ভালোভাবে জমি ৫-১০ সেমি করে কয়েকবার ক্রস চাষ দিয়ে 'মই' দ্বারা সমান করতে হবে। তারপর ১৫-২০ সেমি উঁচু এবং ২.৫ মি বাই ৮মি প্লট তৈরি করে নিতে হবে। প্রতিটি প্লটে ২ মিটার পর পর ৪৫ বাই ৪৫ বাই ৪০ সেমি আকারের পিট তাতে বীজ বপন করতে হবে। প্রতিটি প্লটের মাঝে জল নিষ্কাশনের জন্য সরু নালী এবং জমির চারপাশে অপেক্ষাকৃত মোটা নালী তৈরি করে রাখতে হবে। যাতে প্রয়োজনে জল নিষ্কাশন করা যায়। কুমড়োর ভালো ফলন পেতে মাটির উর্বরতার উপর ভিত্তি করে জমিতে বিভিন্ন সার ব্যবহার করা দরকার। এক্ষেত্রে মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে প্রতিটি 'পিটে' সার ব্যবহার করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। বীজ বপনের প্রায় ১০-১৫ দিন আগে প্রতিটি প্লটে ১০-১৫ কেজি গোবর সার এবং প্রতিটি পিটে ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৪০ গ্রাম এমপি, ৪০ গ্রাম জিপসাম মাটির সাথে ভালোভাবে মিশ্রিত করে পিট তৈরি করলে ভালো হয়। বীজ অঙ্কুরিত হলে ১৫-২০ দিন পর প্রতিটি পিটে ২০ গ্রাম ইউরিয়া সার মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। কুমড়ো গাছের বৃদ্ধি, ফুল ও ফল ধারনের জন্য মাটিতে রস থাকার প্রয়োজন। শুষ্ক আবহাওয়া থাকলে ৫-৬ দিন পর পর হালকা সেচ দিতে হবে। তবে ফল তোলার তিন সপ্তাহ আগেই সেচ দেওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। অপরদিকে খেয়াল রাখতে হবে বৃষ্টির জল যাতে বেশি দিন গাছের গোড়ায় জমে না থাকে। বীজ বপণের দু’মাসের মধ্যে কুমড়োর গাছ ফল ধরতে শুরু করে এবং রোগাক্রান্ত না হলে আড়াই মাসব্যাপি ফল দিয়ে থাকে। পরাগায়নের ১০-১৫ দিনের মধ্যে ফল সবজি হিসেবে খাওয়ার উপযোগী হয়। কুমড়ার ফল সংগ্রহের সুনির্দিষ্ট কোন পর্যায় নেই। ব্যবহারের উদ্দেশ্য অনুযায়ী অপক্ক ও পরিপক্ক ফল পাড়া হয়। ফল যত বেশি পাড়া হয়, ফলন তত বেশি হয়। সবজি হিসেবে ব্যবহার করতে হলে ওজন আধা কেজি হলেও ফল পাড়া যায়। ফল পরিপক্ক হলে হালকা হলুদ রং ধারণ করে। ফল পাকাতে চাইলে শেষের দিকে গাছে দিতে হবে। ফল পাকালে হেক্টর প্রতি ফলন কমে যায়। তবে সবজি হিসেবে ফল সংগ্রহ করলে হেক্টর প্রতি ২০ টন ফলন পাওয়া যায়।