নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য জলের পাইপ লাইন বসেছিল। গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় তা পৌঁছে গিয়েছে। তারপরও জলের হাহাকার। কিছু এলাকায় প্রথম কিছুদিন জল এলেও তারপর থেকে বন্ধ। পুরো গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গত কুড়ি দিন ধরে পানীয় জল সমস্যায় ভুগছেন বাসিন্দারা। যা নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। পাইপ বসানোর পরেও কেন খাওয়ার জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছাচ্ছে না তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
জল ভোগান্তিতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের বিরুদ্ধেও সরব হচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। তাদের অভিযোগ, পানীয় জলের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। কিছু গ্রামে পাইপ লাইন করা এবং ট্যাপ থাকলেও শুরুর কয়েকদিন জল এলেও তারপর থেকে বন্ধ। ব্যক্তিগত বাড়ির সাবমার্শিবল, স্কুল এবং কুঁয়ো থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষজন। এমনই চিত্র উঠে এসেছে মেদিনীপুর সদরের চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ওই এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের পক্ষ থেকে পানীয় জলের জন্য পাইপ লাইন করা হয়েছিল বিভিন্ন এলাকায়। সেই জলও পৌঁছাচ্ছিল। আবার কিছু এলাকায় শুরুর কয়েকদিন জল এলেও পরে আর আসেনি বলে অভিযোগ। তবে যে এলাকায় জল আসছিল তাও গত ২০দিন ধরে বন্ধ।
চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেখা বেরা, উমা মাহাত-রা বলেন, " স্কুল এবং লোকের বাড়ি থেকে জল নিয়ে আসতে হয়। না হলে খেতে পেতাম না। এখানে পাইপ লাইনও আছে, ট্যাপও আছে। জল আসে না। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং ব্যক্তিগত বাড়ির সাবমার্শিবলে জল না দিলে কুঁয়ো এবং পুকুরের জল পান করতে হতো। " ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িকাশুলি গ্রামে দেখা গেল আরেক চিত্র।
সেখানকার বাসিন্দা সাবিত্রী মাহাত, রেখা মাহাত-রা বলেন, " পাইপলাইন করার পর কয়েকদিন জল এসেছিল। তারপর থেকে আর আসেনি। তবে ওই জল পানীয়-র যোগ্য নয়। পাশের গ্রাম থেকে জল নিয়ে আসতে হয়। আর না হলে বাড়িতে থাকা কুঁয়োর জল গবাদিপশুর পাশাপাশি মানুষকেও পান করতে হচ্ছে। " বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা দিয়েছিলেন, " যত তাড়াতাড়ি হোক মানুষ জল পাক। শুধু পাইপ ফেলে রাখলে হবে না। অনবরত নজর রাখতে হবে। "
স্থানীয় তৃণমূল নেতা সেখ আফসার বলেন, " কুড়ি দিন ধরে জল নেই এলাকার কোথাও। খুবই সমস্যা মানুষজনের। পঞ্চায়েতের কিছু কিছু জায়গায় সাবমার্শিবল আছে বলে মানুষগুলো জল পাচ্ছেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের কোনরকম হেলদোল নেই। কুড়ি দিন লাগাতার জল নেই অথচ তাদের কোনো গুরুত্ব নেই। বিধায়ক, সাংসদ বা বড় সরকারি আধিকারিকরা ফোন করলে তখন কাজ করে। না হলে ওরা কাজ করে না। গ্রামের মানুষজন লোকের বাড়ি, স্কুল এবং দূরে পঞ্চায়েতের সাবমার্শিবল থেকে জল নিয়ে আসছে। এতে তো সারাদিনের জলের সমস্যা মিটবে না। যে কারণেই মানুষকে কুঁয়োর জলও খেতে হচ্ছে। "
জলের সমস্যার কথা মানছেন চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারকনাথ বেরা। তিনি বলেন, " একটি পাইপ ফেটে গিয়েছে। যে কারণে জল সরবরাহ সমস্যা হচ্ছে। আমরা বিডিও-কেও জানিয়েছি। দ্রুত মেরামত করা হবে। "