নিজস্ব সংবাদদাতা: ম্যারাথন দৌড় কিংবা ঘোর দৌড়ের কথা তো শুনেছেন কিন্তু কালি দৌড়ের কথা কি শুনেছেন? বিভিন্ন কালী প্রতিমা নিয়ে চলে রেষারেষি। কে আগে কালী ঠাকুরের মূর্তি নিয়ে দৌড়াতে পারে। হ্যাঁ এমনই এক অদ্ভুত দৌড়ের সাক্ষী থাকে মালদহবাসী।
কাঁধে কালী প্রতিমাকে তুলে নিয়ে দৌড়। মালদার চাচোল এর ৩৫০ বছরের রীতি আজও জনপ্রিয়। মা কালীকে মাথায় নিয়ে ভক্তরা তারস্বরে দৌড়াচ্ছে। কে কত আগে যেতে পারে তার এক প্রতিযোগিতা চলছে। ৩৫০ বছর আগে রাজা শুরু করেছিলেন এই প্রতিযোগিতা তা আজও অক্ষুন্ন রয়েছে। মালদহের চাচোল এর মালতীপুরে আয়োজিত হল ঐতিহ্যবাহী কালিদৌড়।
মালতিপুর এলাকার আটটি কালী প্রতিমাকে কাঁধে নিয়ে ছুটলেন এলাকাবাসী। আর তা দেখার জন্য রাস্তার দুই ধারে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। কালিদাহর প্রতিযোগিতাকে ঘিরে রচিত হয় সম্প্রীতির এক অপূর্ব আবহ। এই রীতির পিছনে লুকিয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। দৌড়ে নিয়ে যাওয়ার পর যাদের কালী প্রতিমা অক্ষত অবস্থায় থাকবে তাদের প্রতিমাকেই প্রথমে বিসর্জন দেওয়া হবে। নিজেদের ক্লাব কিংবা বাড়ির পুজিত কালী কাঁধে করে নিয়ে দৌড় লাগান উদ্যোক্তারা।
বহুকাল আগে রাজা মহেন্দ্র নারায়ন শুরু করেছিলেন এই প্রতিযোগিতা। শুক্রবার রাতে কালিদৌড় প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় আনন্দ এবং আবেগ নিঃসৃত এক পরিবেশ। প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে আমকালী। এরপরে হ্যানটা কালী, বাজার কালী, শ্যামা কালী, বুড়ি কালী, হাট কালী, চনকাকালী সহ বিভিন্ন কালীর বিসর্জন হয়। কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য মোতায়ন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী এবং র্যাফ।
উপস্থিত ছিলেন চাচোল এর এসডিপিও সোমনাথ সাহা, চাচল থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুন্ডু, সহ পুলিশ কর্তারা। এদিন উপস্থিত ছিলেন মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী। দুই কালির মুখোমুখি হওয়ার মুহূর্তে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে উলুধ্বনি দেন পুরুষ এবং মহিলারা।