নিজস্ব সংবাদদাতা: বিরল রোগে আক্রান্ত এক শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। মাত্র তিন বছরের অনুশ্রী ধর সময়মতো প্রয়োজনীয় ওষুধ না পাওয়ায় প্রাণ হারাল। অভিযোগের তীর এসএসকেএম সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাকপুরের বাসিন্দা অনুশ্রী গাউচার ডিজিজ নামের এক বিরল জিনঘটিত রোগে আক্রান্ত ছিল। এই রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজন হয় এনজাইম রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির (ERT)। চিকিৎসকদের মতে, সময়মতো ওষুধ দেওয়া গেলে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। কিন্তু অনুশ্রীর বাবা-মায়ের অভিযোগ, সাত-আট মাস ধরে আবেদন করার পরও তাঁরা ওষুধ পাননি।
অনুশ্রীর বাবা বিপ্লব ধর এবং মা শিখারানি ধর জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁরা প্রথমবার এসএসকেএম-এর মেডিক্যাল বোর্ডের দ্বারস্থ হন। এরপর দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরেও কোনও ফল মেলেনি। অবশেষে চলতি বছরের ৩ মার্চ অনুশ্রীকে ভর্তি করা হয় এসএসকেএমের অ্যানেক্স পুলিশ হাসপাতালে। অভিযোগ, সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না করেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনুশ্রীকে ছেড়ে দেয়। কিছুদিনের মধ্যেই মৃত্যু হয় শিশুটির।
পরিবারের প্রশ্ন, যখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার কেন্দ্রীয় তহবিল রয়েছে, এবং এসএসকেএম পূর্ব ভারতের ‘সেন্টার অফ এক্সিলেন্স’ হিসেবে চিহ্নিত, তখন কেন সময়মতো চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা করা গেল না?
/anm-bengali/media/media_files/pylh5bnC6U7yG6AQptaF.jpg)
ঘটনার পর অনুশ্রীর শোকস্তব্ধ বাবা-মা রাজ্য সরকারের বিরল রোগ সংক্রান্ত নীতিকেই প্রশ্নের মুখে তুলেছেন। তাঁরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, একটি শিশুকে শুধু গাফিলতির কারণে প্রাণ দিতে হল, যা ক্ষমার অযোগ্য।
এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার গাফিলতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এত গুরুত্বপূর্ণ একটি হাসপাতালে যদি বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসায় এমন উদাসীনতা দেখা যায়, তবে তা গোটা ব্যবস্থার পরিপূর্ণ মূল্যায়নের দাবি রাখে।