নিজস্ব সংবাদদাতা: হাসপাতালে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে বিগত কিছুদিন ধরে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। সারা দিন ধরেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ভিড়। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল, মত ভুলে বুদ্ধদেবের আরোগ্য কামনা করছেন বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরাও। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রমী সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন। ধনঞ্জয় কাণ্ড টেনে এনে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি কবিতা লিখেছেন তিনি যার নাম 'ধনঞ্জয়ের গান'। সেখানে 'প্রৌঢ় ফাঁসুড়ে'র নাম উল্লেখ করেছেন এই সঙ্গীতশিল্পী। কারুর নাম উল্লেখ না করলেও সুমনের ইঙ্গিত যে বুদ্ধদেববাবুর দিকেই তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারুর। কবিতার ছত্রে ছত্রে আক্রমণ করেছেন কবীর সুমন।
এদিকে জানা গেছে যে একটু সুস্থ হতেই বাড়ি যাওয়ার ‘আবদার’ জানাচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার সকালে তিনি নাকি বলেছেন যে তাঁকে ছেড়ে দিতে, তিনি বাড়ি যাবেন। তিনি নিজের দু’কামরার ফ্ল্যাটেই ভাল থাকবেন। যদিও তাঁর এই ‘আবদার’ রাখতে নারাজ চিকিৎসকদল। ৭৯ বছরের কমরেডকে এখনও পর্যবেক্ষণে রাখতে চাইছেন তাঁরা। গত শনিবার ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে আলিপুরের উডল্যান্ডস হাসপাতালে ভর্তি হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর শরীর এতটাই খারাপ ছিল যে তড়িঘড়ি ৯ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া হয়। তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া শ্বাসকষ্টও হচ্ছিল খুব বেশি। ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রেখে টানা দু’দিন লড়াই চলে। সোমবার থেকে পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো হয়। ওইদিন বিকেলে ভেন্টিলেশন থেকে বের করে আনা হয় বুদ্ধদেববাবুকে। আপাতত রয়েছেন বাইপ্যাপ সাপোর্টে। এখন অনেকটাই ভাল রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, রক্তচাপ, শর্করার পরিমাণ সবই স্বাভাবিক।
মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসকরা জানান, তিনি অক্সিজেন ছাড়া নিজেই ২ ঘণ্টা মতো প্রশ্বাস নিতে পেরেছেন। কমেছে সিআরসি’র পরিমাণও। যা ছিল ৩০০, সেটা এখন নেমে এসেছে ১২৫এ। তবে কাশি হচ্ছে তাঁর। সেই কারণে এখনও রাইলস টিউবে করে খাওয়াতে হচ্ছে তাঁকে। আগেই তাঁর জ্ঞান ফিরেছিল। হাত নেড়ে, ইশারায় নানাভাবে নিজের কথা বোঝানোর চেষ্টা করেন বুদ্ধদেববাবু। এবার সামান্য কথাও বলছেন বলে জানা গেছে। তিনি বাড়ি ফিরতে চাইছেন। বাইপ্যাপ সাপোর্ট, রাইলস টিউব এসব আর রাখতে চাইছেন না বলে চিকিৎসকরা জানান। তবে অবস্থা দেখে তাঁকে অনেকটা বুঝিয়ে শান্ত করা হয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলতে চাইছেন যে তিনি নিজের বাড়িতেই সুস্থ থাকবেন, হাসপাতালে আর থাকবেন না। তবে চিকিৎসকদের মতে, এখনই তাঁকে ছেড়ে দিলে আরো বেশি সমস্যা হয়ে যাবে।