নিজস্ব সংবাদদাতা: পয়লা বৈশাখের আগে অনেক বাঙালির মনেই একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—এবার কি আদৌ মিলবে বাংলাদেশি ইলিশের স্বাদ? তবে ওপার বাংলার বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বলছে, সেই সম্ভাবনা কার্যত নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, স্থানীয় মৎস্যজীবী থেকে ব্যবসায়ী, সবারই মত—চলতি পরিস্থিতিতে ভারতে ইলিশ রফতানির কথা ‘ভুলেও ভাবা উচিত নয়’। কারণ? দেশটির বাজারে এই মুহূর্তে ইলিশের সঙ্কট চরমে। বর্ষবরণের প্রাক্কালে বাংলাদেশের বরিশাল, পোর্ট রোড বাজার ও মোকাম-সহ একাধিক মাছবাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে, ইলিশের জোগান অত্যন্ত কম। যা পাওয়া যাচ্ছে, তার বেশির ভাগই ছোট আকারের।
১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের প্রতি মণ (প্রায় ৩৭ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা দরে। ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিকোচ্ছে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা মণ। অর্ধেক কেজির মাছের দামও ৫৫ হাজার টাকা মণ। এই দাম শুনে অনেক ক্রেতাই বাজার থেকে ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে। মাছপ্রেমী বাঙালিদের কাছে এই দৃশ্য খুবই হতাশাজনক।
/anm-bengali/media/media_files/2C4xmHxZcVtJgfohAJkt.jpg)
স্থানীয় মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী সংগঠন ও মাছ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে ইলিশ ধরার উপর নানা বিধিনিষেধ রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মাছের জোগান বিপুল হারে কমেছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বরিশালের বড় বাজারে ৫০ মণ মাছও আসেনি। পরে বেলা বাড়লেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি।
চাহিদা বাড়লেও জোগান কম থাকায় দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অবস্থায় যদি ভারতে ইলিশ রফতানি করা হয়, তাহলে স্থানীয় বাজার আরও চাপে পড়বে—এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। বাংলাদেশের মৎস্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বর্ষার জল বাড়লে নদীতে ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। সেক্ষেত্রে রফতানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
তবে ততদিন পর্যন্ত ভারতে ইলিশ রফতানির সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে পয়লা বৈশাখে ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি ইলিশ আসার সম্ভাবনা প্রায় ক্ষীণ। ইলিশপ্রেমীদের অপেক্ষা আপাতত দীর্ঘতর হচ্ছে। বর্ষার জলই হয়তো আবার ফিরিয়ে আনবে দুই বাংলার ইলিশ উৎসবের সেই চেনা রূপ।