পঞ্জিকার দিন বদলের হের-ফের, ছিন্নভিন্ন মেদিনীপুর কলেজ স্কোয়ারের নস্টালজিয়া পুজো

এবারে তার ব্যতিক্রম ঘটলো বেশ কিছু কারনের জন্য।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
WhatsApp Image 2025-02-04 at 16.12.25

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা: ঐতিহ্যবাহী এবং বিপ্লবী শহর হল এই পশ্চিম মেদিনীপুর। একসময় অবিভক্ত মেদিনীপুর ছিল। যার মধ্যে ছিল পূর্ব মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম। পরবর্তীকালে তা ভাগ হয়ে নতুন জেলা রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই জেলা শহরে যেমন আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিপ্লবীদের বাড়ি ঘর, ঠিক তেমনি রয়েছে বেশ কিছু পুজো ও কাহিনী।

যেমন এরকমই এক সরস্বতী পুজো রয়েছে মেদিনীপুর কলেজের কাছে কলেজ স্কয়ারের সরস্বতী পুজো। যার আভিজাত্যটাই হল বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক কার্টুন, ছড়া, কবিতা সেইসঙ্গে পাঁচফোড়নের মত নিন্দে করা ছবি ছাপা। এই কার্টুন এবং চালচিত্র প্রায় পঞ্চাশ বছরের উপর ধরে করে আসছে তৎকালীন প্রজন্ম থেকে বর্তমান প্রজন্ম।

এই কলেজ স্কোয়ারের ১০০ মিটারের মধ্যে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টি পুজো হতো সাডম্বরে। গোটা জেলার মানুষ এই পুজোর দিনে ভিড় জমাত এই কলেজ স্কোয়ারে। তারা পুজো মণ্ডপে দাঁড়িয়ে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে পড়তো সেই সব কবিতা, চুটকি ছড়া ও উপভোগ করতো ছবি ছাপা।

     

কিন্তু এবারে তার ব্যতিক্রম ঘটলো বেশ কিছু কারনের জন্য। এই কারণগুলি খতিয়ে দেখতে গিয়ে দেখা গেল বর্তমান জেলা প্রশাসনের ঘন ঘন নিয়ম পরিবর্তন এবং খাম খেয়ালী নির্দেশিকায় পুজো থেকে বিরত হয়েছে বেশ কিছু ক্লাব। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পঞ্জিকার দিনক্ষণের হের-ফের। কারণ পঞ্জিকা মতে দুদিন পড়েছে এবারের সরস্বতী পুজো। 

২ জানুয়ারি দুপুর বেলা বারোটা থেকে পরের দিন পুজো হচ্ছে। ফলে প্রথম দিন পূজো অনেকেই করতে চাইছেন না। আবার অনেকেই প্রথম দিনেই পূজো সেরেছেন বেলা করে। আবার অনেকেই ইতিমধ্যে মন্ডপই তৈরি করে উঠতে পারেনি। ফলে ক্লাব কর্তাদের মধ্যে দিনক্ষণ নিয়ে ধোঁয়াশায় কমলো এই পুজোর সংখ্যা।

এরই সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন প্রজন্ম। না আসার আক্ষেপ সেই সঙ্গে মূল্যবৃদ্ধি ও মোবাইল এর কারণ। কারণ বর্তমান প্রজন্ম শুধু মোবাইলেই আসক্ত। ভিডিও রিল, শটস, গেম এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম-এর মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা ডুবে গেছে। যার ফলে এই কলেজ স্কোয়ারের নস্টালজিয়া সরস্বতী পুজো নিয়ে উন্মাদনা নেই বললেই চলে। ফলে সেই বিগত দিন থেকে টেনে আনা ৪০ ঊর্ধ্ব ক্লাব সদস্যরা কোন মতে টিকিয়ে রেখেছে তাদের এই সরস্বতী বন্দনা। বর্তমান ক্লাব কর্তারা এর জন্যে উগরে দিয়েছেন একরাশ ক্ষোভ এবং হতাশা।