নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ শ্বশুরবাড়িতে জামাই ধার নিয়েছিল টাকা। সময়ে ফেরত দিতে না পারায় কথা কাটাকাটি শুরু হয়েছিল। জামাইয়ের বাড়ির এলাকায় এসে নিজের জামাইকে খুন করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। অন্ধকার রাস্তায় ফাঁকা পেয়ে ভোজালির কোপ দেয়। ওই ঘটনায় গ্রেফতার শ্বশুর, কাকা শ্বশুর ও শ্যালক। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। জামাই ছাড়াও আহত হয়েছেন প্রতিবেশী এক যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, আহত দুই যুবকের নাম সমর ঘোষ ও বাপাশ ঘোষ। দুজনেরই বাড়ি গুড়গুড়িপাল থানার রেড়াপাল গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মনিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের রেড়াপালের বাসিন্দা সমর ঘোষ (৩২) বিয়ে করেন ডেবরা থানার বারাগড় এলাকায়। আর্থিক অভাবে শ্বশুরবাড়িতে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। যা ১০ দিন পরে ফেরত দেওয়ার কথা। ওই টাকাও কোন এক ফাইনান্স কোম্পানির থেকে লোন নিয়েছিল শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কিন্তু ১৫ দিন হয়ে গেলেও টাকা ফেরত দিতে পারেনি জামাই অর্থাৎ সমর ঘোষ। ফোনে টাকার জন্য চাপ দেয় সমরকে। তর্ক-বিতর্কও শুরু হয় শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সমরের। অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সমরের বাড়িতে পৌঁছায় শ্বশুর খোকন নায়েক, কাকা শ্বশুর রতন নায়েক ও শ্যালক সুরেশ নায়েক। বাড়িতে সে সময় ছিল না সমর। সে বাড়ি ফিরে শ্বশুর বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ততক্ষণ বেশ কিছুটা রাস্তা চলে এসেছে তারা। তবুও সমর তাদের সঙ্গে দেখা করতে কঙ্কাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের শালডাঙ্গা আসে রাত্রি দশটা নাগাদ। জঙ্গলের ফাঁকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখা করেন তাদের সঙ্গে। সেই সময় তার শ্যালক ভোজালি মেরে তাকে খুন করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। সমরের সঙ্গে ছিল আরো দুই প্রতিবেশী যুবক। তারা বাঁচাতে গেলে তাদের একজনকে ভোজালি দিয়ে আঘাত করে। তারপরই শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যান ডেবরা। খবর যায় বাড়িতে এবং গুড়গুড়িপাল থানায়। পুলিশ ও বাড়ির লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে। সমরের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে স্থানান্তরিত করে কলকাতায়।
অপর যুবক বাপাশকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে সমরের পরিবারের লোকজন। রাতেই ডেবরার বারাগড় থেকে শ্বশুর, কাকা শ্বশুর ও শ্যালককে গ্রেফতার করে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ। বুধবার তাদের মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়। সমরের শ্যালক তথা সুরেশ নায়েককে দু'দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।