নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ কোল্ড স্টোরে মজুত আলু নিয়েই দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ী থেকে কৃষকেরা। কয়েকদিন বাদেই বাজারে চলে আসবে নতুন আলু। কিন্তু কোল্ডস্টোরেজে এখনো মজুত লক্ষ লক্ষ প্যাকেট আলু। তাই মজুত আলুর ভবিষ্যৎ কি হবে এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ী থেকে কৃষকেরা। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, রাজ্য সরকারের নির্দেশ মত ভিনরাজ্যে আলু পাঠানো বন্ধ রয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতার কাছে আর্জি ব্যবসায়ীদের হিমঘরে এখনও প্রচুর আলু মজুত রয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে সেই আলু বাইরে বার না-করা হলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। সেই কারণে অবিলম্বে বাইরের রাজ্যে আলু রপ্তানিতে কড়াকড়ি তুলে নেওয়া হোক। এদিকে আলু নিয়ে চরম তৎপরতা প্রশাসনের মধ্যে, ইতিমধ্যে জেলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে আলু জাতে কোন ভাবেই যেতে বা পারে, সেই জন্য রাজ্য সড়ক সহ বিভিন্ন জায়গায় কড়া প্রশাসনের নজরদারি। বিভিন্ন জায়গায় রাজ্য সড়কের উপর করা হয়েছে চেকপোস্ট।
পশ্চিম মেদিনীপুরের আলু মূলত ঝাড়খণ্ড ও ছত্তীশগড়ে যায়। কিন্তু এ বছর বাজারদর বেশি থাকায় আলু বাইরের রাজ্যে পাঠানোয় রাজ্য সরকার কড়াকড়ি শুরু করেছে বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী এক বার আলু রপ্তানি বন্ধ করার কথা বলেছিলেন বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের উপায় ভেবে। তার পর থেকেই রাজ্যের সীমানায় আলুর গাড়ি আটকানো শুরু হয়। এই নিয়ে আলু ব্যবসায়ীরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকেও বসলেও কোনও সুরাহা হয়নি।
আলু ব্যবসায়ী সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে হিমঘরে এখনও ১ লক্ষ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত রয়েছে। এরমধ্যে চন্দ্রকোনা এক ও দুই নম্বর ব্লক মিলিয়ে কোল্ডস্টোরজগুলিতে এখনো আলু মজুত রয়েছে ১০ লক্ষ ৮১ হাজার ৬২০ প্যাকেট। ভিনরাজ্যে আলু পাঠাতে না পারায় কোলস্টোরেই রয়েছে এখনো মজুত আলু এই আলু নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় কোল্ড স্টোর কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। কারণ ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে স্টোর থেকে আলু না বেরোলে, চলতি বৎসরের আলু কোল্ডস্টোরে মজুত করতে, সমস্যায় পড়তে হবে কোল্ডস্টোরেজ গুলিকে। এমনিতেই চন্দ্রকোনাসহ এই জেলার আলুর গুণগতমান খারাপ বলছেন এলাকার ব্যবসায়ী থেকে কৃষকেরা। তাই এই আলুকে ভিনরাজ্যে পাঠাতে হয়। সেই আলু এবার বাইরে রাজ্যে পাঠাতে না পারায় চরম সমস্যায় ব্যাবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, পশ্চিম মেদিনীপুরে যে ধরনের আলু উৎপাদন হয়, তা কলকাতার বাজারে যায় না। যায় মূলত ঝাড়গ্রামের সীমানা হয়ে ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তীশগড়ে য়ায়। সেই কারণে ওই আলু রপ্তানি করা জরুরি। এদিকে কোনও নির্দেশিকা ছাড়াই আলুর গাড়ি যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এতেই বিপাকে পড়েছেন আলুর কারবারিরা। তাই তারা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন, আলু বাইরে পাঠানোর অনুমতি দেয়া হোক। এখন দেখার কোল্ডস্টোরেজে মজুত আলুর ভবিষ্যৎ কি হয়।