নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: মাঘের শীতের তীব্রতায় যখন প্রকৃতি-সহ মনুষ্যকুল ও জীবজগৎ কাবু, ঠিক তখনই আগমন ঘটে ঋতুরাজ বসন্তের। ফাগুনের হাওয়ায় ও উৎসবের রঙে মেতে ওঠে প্রকৃতি। শীতে বৃক্ষের পত্ররাজি ঝরে পড়ে, প্রকৃতিতে আসে স্তব্ধতা। বসন্তের আগমনে সেই আড়মোড়া ভেঙে প্রকৃতি হয়ে ওঠে সজীব। বসন্তের আগমনধ্বনি পাওয়া যায় গাছের নতুন কুঁড়িতে। এক অনিন্দ্য সজীবতা, উচ্ছ্বাস আর আনন্দের পূর্ণরূপ শোভিত হয় বসন্তে। ষড়ঋতুর বাংলায় বসন্ত বাংলা বছরের সর্বশেষ ঋতু হলেও বসন্তকে ঘিরেই যাবতীয় উচ্ছ্বাস থাকে বাঙালির। মূলত বসন্ত ঋতু মানে ফাগুন ও চৈত্র মাসকে বোঝায়। সেই মতো গত ৯ চৈত্র রবিবার কবিগুরুর চরণে পুষ্প নিবেদন করে নীহারিকা মঞ্জুরি নৃত্য ও আবৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বসন্ত উৎসব পালিত হল।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার জামনা এলাকায় নীহারিকা মঞ্জুরি নৃত্য ও আবৃত্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রথমে প্রভাত ফেরি ও প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। সারাদিন জুড়ে শিশু-কিশোরদের নৃত্য ও আবৃত্তির পরিবেশনার মধ্য দিয়ে মঞ্চ জমে ওঠে। স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুরাগীরাও অংশ নেন এই অনুষ্ঠানে। এছাড়াও, আনন্দ-উৎসবের আবহে সকলেই আবির খেলায় মেতে ওঠেন। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল প্রশিক্ষক ঈশানী দাশ রায়ের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের অসাধারণ পরিবেশনা যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
এদিনের অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে প্রশিক্ষক ঈশানী দাশ রায় বলেন, "আজকের এই শুভ অনুষ্ঠানে আপনাদের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আমাদের "নীহারিকা মঞ্জুরি" শুধুমাত্র একটি নৃত্য ও আবৃত্তি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির উত্তরাধিকার সংরক্ষণের এক মহৎ প্রচেষ্টা। সাংস্কৃতিক চর্চা আমাদের চেতনাকে শাণিত করে, আমাদের শিকড়ের সাথে আমাদের যুক্ত রাখে। ছোটদের এই অসাধারণ পরিবেশনা আমাদের নতুন প্রজন্মের প্রতিভা ও পরিশ্রমের প্রতিফলন। আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই সকল শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজকের এই সুন্দর পরিবেশনা আমরা উপভোগ করতে পারছি। এই পথচলা যেন আরও সুদূরপ্রসারী হয়, আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি যেন এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আরও সমৃদ্ধ হয়- এই কামনাই করি"।