নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুরঃ ঘোষণা হয়েছে বিজেপির প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা। সেই তালিকায় নাম নেই মেদিনীপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের। তাহলে কি অন্য কেউ প্রার্থী হচ্ছেন ? সেই জল্পনাই ছড়িয়েছে দলের অন্দরে। উঠে আসছে ভারতী ঘোষের নাম। তা দলের অন্দরে প্রচার হতেই ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। একসময় ভারতী ঘোষের ইশারাতেই বহু বিজেপি কর্মী, কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই ভারতী ঘোষকে নেত্রী বলে মানতে নারাজ তারা।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন ভারতী ঘোষ। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে 'জঙ্গলমহলের মা' বলেও সম্মোধন করেছিলেন তিনি। তারপর কংসাবতী নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। ভারতী ঘোষ এখন বিজেপি নেত্রী। গত লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারী ওরফে দেবের কাছে। এবারে বিজেপির হয়ে ঘাটাল কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়। তবে মেদিনীপুর কেন্দ্রে নাম ঘোষণা না হলেও দিলীপ ঘোষের নামে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছে বিজেপি কর্মীরা। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের গড়মাল, জাড়া এলাকায় দেওয়াল লিখনে অস্বস্তিতে বিজেপি। বিষয়টি আবেগবশত বলে দাবি নেতাদের। তবে ভারতী ঘোষ বিজেপি প্রার্থী হলে তা মানতে পারবেন না বিজেপি নেতাকর্মীরাই, এমনটাই দাবি তাদের।
খড়্গপুর পৌরসভার বিজেপির প্রাক্তন কাউন্সিলর বেলারানি অধিকারী বলেন, " ২০২৫ সালে জেতার পর আমাদের তৎকালীন এসপি ভারতী ঘোষ অত্যাচার করেছিলেন। আমরা জনগণের ভোটে জিতেছিলাম। কিন্তু ভারতী ঘোষ সমাজ বিরোধীদের দিয়ে ভয় দেখিয়ে আমাদের তুলে নিয়েছিল। আমরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম এলাকা ছেড়ে চোরের মত। তাও আমাদের শান্তি ছিল না। আমাদের প্রেশার দেওয়া হয় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য। আমরা যখন অস্বীকার করি, আমরা করতে পারব না, তখন অনেক কিছুর ভয় দেখানো হয়েছিল। ছেলেকে রেপ কেস দেবে, মাদক কেস দেবে, গাঁজা কেস দিয়ে দেবে। আমার একমাত্র সন্তান। তাই বাধ্য হয়েছিলাম। কর্মীদের উপরও নির্যাতন করা হয়, কেস দেওয়া হয়। কলকাতায় নিয়ে গিয়ে জোর করে আমাকে তৃণমূলে যোগদান করানো হয়। ফলে ভারতী ঘোষ সম্পর্কে আমার ধারণা অন্যরকম। আমি ওনাকে নেত্রী বলে মানতে পারব না। যে মানুষের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করে তাকে নেত্রী হিসেবে মানতে পারব না। " এমন অনেকেই ভারতী ঘোষ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন।
খড়্গপুরের বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, ভারতী ঘোষ যখন পুলিশ সুপার ছিলেন, তখন নানারকম অত্যাচার চলত। নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। গুন্ডাগিরি চলত।
ফলে ভারতী ঘোষ দাঁড়ালে বিজেপি তো জিততে পারবে না এমনকি আমরাও সমর্থন দেব না। কিন্তু দিলীপ ঘোষ থাকায় আমাদের সুখ-দুঃখ যায় থাকুক, শান্তি রয়েছি।