New Update
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। তার পরেই শুরু হয়ে যাবে বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো। দুর্গাপুজো মানেই দেদার মজা, আনন্দ, ফুর্তি।
সারা বছর আপামর বাঙালি বছরের এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। সারা বছরের কর্মব্যস্ততা কেটে যায় এই চারটি দিনে।
সারা বাংলায় বারোয়ারি পুজো ছাড়াও, বেশ কিছু বনেদি বাড়িতেও বহু বছর ধরে পালিত হয়। তেমনই একটি বনেদি বাড়ির পুজো হল সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারে দুর্গা পুজো।
জানা গিয়েছে যে, বিগত ৪০০ বছর ধরে এই পরিবারে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এই পুজোর সূচনা হয়েছিল ১৬১০ সালে। বলা হয় যে, এটি কলকাতার সব থেকে পুরনো দুর্গাপুজো। সেই সময়ে কলকাতায় খুব একটা প্রচলন হয়নি দুর্গাপুজোর।
উল্লেখ্যে, আজ চার শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও বাংলায় এক উজ্জ্বল নাম হয়ে রয়েছে এই সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো। আরও জানা যায় যে, ১৬১০ সালে এই বাড়ির পুজোয় প্রথমে গোলপাতা এবং মাটি দিয়ে আটচালা মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছিল।
মোগল শাসন, নবাবি আমল, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন, ব্রিটিশরাজ, স্বাধীন ভারত, এই সবকিছুর সাক্ষী রয়েছে এই দুর্গাপুজো।
এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, সাবর্ণ রায় চৌধুরী বাংলার একটি ঐতিহাসিক পরিবার।
জানা যায় যে, ১৬৯৮ সালের ১০ ই নভেম্বর সুতানুটি, কলিকাতা ও গোবিন্দপুর গ্রাম তিনটির প্রজাসত্ত্ব সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের কাছ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ইজারা নেয়। এই পরিবার সাবর্ণ চৌধুরী পরিবার নামেও পরিচিত।
সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়িতে তিন মতে পুজো হয় দেবী দুর্গার। পঞ্চমী থেকে সপ্তমীতে নবপত্রিকা প্রবেশ পর্যন্ত বৈষ্ণব মতে পুজো। শাস্ত্র অনুযায়ী, সপ্তমীতে এক দিনের জন্য শ্বশুরবাড়ি আসেন মহাদেব।
তাই ওই দিন পুজোর রীতি বদলে হয় শৈব মতে। আর সন্ধিপুজোর বলি হওয়ার পর থেকে তন্ত্র মতে পুজো হয়। পুজোর এই বিশেষ রীতির নাম ত্রিধারা।
বিদ্যাপতি রচিত দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনী রীতি-নিয়ম মেনে এখানে পূজিত হন দশপ্রহরধারিণী। এই পুজোতে প্রতিমার একপাশে থাকেন শ্রীরামচন্দ্র, আর অন্যপাশে মহাদেব। নৈবেদ্য হিসেবে ভোগ দেওয়া হয় রিতে ঘি মাখানো মাষকলাই।
এই বাড়ির সন্ধিপুজোর একটি বিশেষত্ব রয়েছে। সদ্যস্নাতা পরিবারের সদস্যা ভিজে গায়ে, ভিজ কাপড়ে ভোগ রান্না করেন। মায়ের ভোগে থাকে ল্যাটা বা শোল মাছ। মাছ পুড়িয়ে মাখন মিশিয়ে নিবেদন করা হয় দেবীমূর্তির সামনে।