রেশন দুর্নীতির চরম শাস্তি, ৮ কোটির জরিমানা দিতে হবে রেশন ডিলারকে

ইতিমধ্যেই ওই রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করেছে খাদ্য দপ্তর।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
New Update
 ration

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা: এবার রেশন দুর্নীতির দায়ে মোটা টাকা জরিমানা করা হল রেশন ডিলারকে! জরিমানার পরিমাণ প্রায় ৮ কোটি টাকা। ওই রেশন ডিলার আবার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির পদেও রয়েছেন। অভিযুক্ত রেশন ডিলার কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া সাহাবানচক গ্রাম পঞ্চায়েতের মালতিপুর বোরাবাদ্ধা গ্রামের বাসিন্দা। 

এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই ওই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করছিলেন। রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো হতবাক রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যেই ওই রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করেছে খাদ্য দপ্তর। খাদ্য দপ্তরের এক আধিকরিকের বক্তব্য, ওই রেশন ডিলার দীর্ঘদিন ধরেই দুই হাজারের বেশি ভুয়ো রেশন কার্ড ছাপিয়ে প্রচুর সরকারি খাদ্যদ্রব্য তুলে তা কালো বাজারে বিক্রি করেছেন। ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে রেশন জালিয়াতির প্রচুর তথ্য ও প্রমাণ রয়েছে। 

একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চালানো হয়। এরপরেই বিষয়টি সামনে আসে খাদ্য দপ্তরের। মালদহ জেলা খাদ্য নিয়ামক শাস্বত সুন্দর দাস জানিয়েছেন, সাহাবানচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আসরাফুল ইসলাম নামের একজন রেশন ডিলারকে মোটা অংকের জরিমানা করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভুয়ো রেশন কার্ড, রেশন দপ্তরে নথিভুক্ত করে রেশন সামগ্রী আত্মসাৎ করার যথাযথ প্রমাণ মিলেছে। ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি জালিয়াতি করেছেন। তাকে সাত কোটি ৮৬ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তার ডিলারশিপের লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে। 

bggbhytyu

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য দপ্তর ও অপরাধ দমন বিভাগে অভিযোগকারী হাকিম মিঞা এদিন এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের এলাকার ডিলার মানুষকে সঠিকভাবে পরিষেবা দিচ্ছিল না। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য প্রচুর রেশন সামগ্রী খাদ্য দপ্তর থেকে আসলেও রাতারাতি তা উধাও হয়ে যেত। অধিকাংশ সময় রেশন আনতে গেলে ঘুরে আসতে হত। যার ফলে সাধারণ রেশন উপভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল। বেশ কিছু শিক্ষিত যুবক এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করলে তারা জানতে পারেন রেশন আসলেও তা বাইরে কালো বাজারে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এরপরেই আমরা সম্মিলিতভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য দপ্তর এবং দুর্নীতি দমন বিভাগে লিখিতভাবে বিষয়টি জানায়। এরপরেই খাদ্য দপ্তর ওই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে”। 

vvgfby

তিনি আরও বলেন, শুনেছি ওই রেশন ডিলারকে প্রায় ৮ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এলাকার এক বাসিন্দা মোস্তফা শেখ বলেন, “ওই রেশন ডিলারের ঔদ্ধত্য প্রচুর। মানুষকে মানুষ বলে মনে করত না। সাধারণ রেশন উপভোক্তাদের তাদের প্রাপ্য থেকে তিনি বঞ্চিত করেছেন। রেশন সামগ্রী কালোবাজারি করেই অট্টালিকা প্রমাণ বাড়িও তৈরি করেছেন তিনি”।
যদিও তার দাদা আবু বকর জানিয়েছেন, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। সবটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। আপাতত, মোটা অঙ্কই পরিশোধ করতে হবে ওই রেশন ডিলারকে।