নিজস্ব সংবাদদাতা: বিভিন্ন মামলায় তাঁর পর্যবেক্ষণ এবং রায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতিও। কলকাতা হাই কোর্টের সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে আবার এক নতুন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন। মঙ্গলাবর প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি হল তাঁর এজলাসে। সেই শুনানি শেষে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, 'আর তো ক’টা দিন আছি। তার পর চলে যেতে হবে। যারা ভুলে যায় তারা অকৃতজ্ঞ। কিছু করে যাব, এভাবে চলতে পারে না। যাওয়ার আগে কিছু করে যাব'। উল্লেখ্য, আগামী বছরের অগস্টে মাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অবসর নিতে চলেছেন। তাঁর এই মন্তব্য শুনে এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী কল্লোল বসু বলেন, 'বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক'। জবাবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই আইনজীবীর উদ্দেশে বলে ওঠেন, 'বিপ্লব দীর্ঘজীবী হতে হবেই'।
রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক রায় কার্যত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। যখন ন্যায় বিচারের প্রতি মানুষের আস্থা উঠে গিয়েছিল ঠিক সেই সময়ে সঠিক মানুষ এসে হাল ধরেছেন বিচারের। একাধিক সামাজিক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজে বলেছেন, 'আমি সামাজিক ন্যায়ে বিশ্বাস করি। আমি মনে করি, মানুষকে যদি দ্রুত বিচার পাইয়ে না দেওয়ায় যায় তা হলে মানুষ বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারাবেন'। দ্রুততার সঙ্গে তাঁর নির্দেশ দেওয়া, তা কার্যকর করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে উপায় বলে দেওয়ার মতো ঘটনাও দেখল এই রাজ্য একাধিকবার। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিজাম প্যালেসে তলব করানোই হোক বা মেখলিগঞ্জ থেকে তৎকালীন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে তাঁর কন্যাসহ কলকাতায় ডেকে পাঠানো- সবক্ষেত্রেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অসংখ্য রায় নিয়ে বিস্তর আলোচনা ও বিরোধীদের সমালোচনাও হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরো এক বড় পর্দা ফাঁস করতে চলেছে সিবিআই। সেই পর্দা ফাঁস করা হবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই। বিচারপতির সামনে আজ সিবিআইয়ের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল বলেন, 'ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সমান বিশাল দুর্নীতির খতিয়ান নিয়ে আমরা ১১ সেপ্টেম্বর এজলাসে এসে হাজির হব হুজুর'। জবাবে বিচারপতিও পাল্টা মন্তব্য করেন, 'দুর্নীতি যদি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সমান হয়, তা হলে তাে সেটা অবিলম্বে ভেঙে ফেলা দরকার'। নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
/anm-bengali/media/media_files/JRd7PtTs5FQ9aqi9wsUo.jpeg)