জানেন কি বাঁকুড়ার হাজরা বাড়ির পুজোর মূল আকর্ষণ কি ?

থিম পুজোর রমরমার মধ্যেও ফিকে হয়ে যায়নি গ্রাম বাংলার সাবেকি পুজোগুলো। আজও তারা তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। বহু মানুষ এখনও সেই আগের সাবেক পুজোর সাবেকিয়ানাকে মর্যাদা দিয়ে থাকেন।

author-image
Adrita
New Update
হ

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাঁকুড়ার হাজরা বাড়ি পুজোতে রাজ অর্ঘ্যে নিবেদিত হয় ‘রাজবলি’। নবমীর সকালে রাজবলি দেওয়াই নিয়ম বাঁকুড়ার পাত্রসায়েরের হাজরা বাড়ির দুর্গাপুজোয় (Durga Puja)। হাজরা বাড়ির দুর্গামন্দির চত্বরে ছাগল ও মহিষ বলি করে গ্রাম প্রদক্ষিণে বেরিয়ে পড়েন এই রাজবলির অন্যতম পুরোহিত। হাজরাবাড়ি থেকে লোহার বাড়ি, দত্তবাড়ি, চন্দ্রবাড়ি, দাসপাড়া, কামারপাড়া হয়ে হলুদবুনি মোড়ের সরকার বাড়ির দুর্গামণ্ডপ মিলিয়ে ১২ টি বাড়ির বলির পর শেষ হয় রাজবলি পর্ব। তবে শুধু পাঁঠা বা মহিষ নয়, নিরামিষ বলিও হয়। আখ, ছাঁচি কুমড়োও অনেকে বলি দেন। এই রাজবলিই বিশেষ আকর্ষণ পাত্রসায়েরের হাজরা বাড়ির পুজোয়। নবমীর সকালে এই পরিবারের দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণে রাজবলি সবচেয়ে বিখ্যাত। কমবেশি একশোটি ছাগল বলির পাশাপাশি একজোড়া মহিষ বলি হয়। হাজরাবাড়ির দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে প্রথম বলি হওয়ার পরে রাজবলি বা রাজার বলি বাজনা সহযোগে পাত্রসায়েরে গ্রাম পরিক্রমায় বের হয়। এই রাজার বলি দেখতে দূরদূরান্তের বহু মানুষ ভিড় করেন। 

ব

 হাজরা পরিবারের বর্তমান সদস্য তথা পাত্রসায়ের বামিরা গুরুদাস বিদ্যায়তনের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রাজেন্দ্রপ্রসাদ হাজরা বলেন, “আমাদের আদিপুরুষ নন্দরাম ছিলেন রাজা চৈতন্য সিংহের হাজার সৈনিকের অন্যতম প্রধান সেনাপতি। আমাদের আসল পদবি ছিল চক্রবর্তী। তদানীন্তন মল্লরাজা চৈতন্য সিংহের আমাদের পূর্বপুরুষ নন্দরাম হাজার সৈনিকের প্রধান সেনাপতি হওয়ায় তাঁকে হাজরা বলে সম্বোধন করা হত। সেই থেকেই আমাদের পদবি হাজরা হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হয়। পুজোর সূচনা সম্পর্কে পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে কিছু কথা শুনেছি। তবে কথিত আছে অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ্বে বিষ্ণুপুরের তদানীন্তন মল্লরাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় পাত্রসায়রের রাজবাড়িতে দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল। এই পুজোর সূচনা নিয়ে যেটুকু জানি আমাদের হাজরা পরিবারের আদিপুরুষ নন্দরাম হাজরা খাজনা আদায়ে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে দেবীমূর্তির দর্শন পান। রাতে দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে শালগ্রাম শিলা এনে মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মন্দিরে একচালার দেবীমূর্তির পুজো শুরু করেন।”