হরি ঘোষ, পাণ্ডবেশ্বর: পাণ্ডবেশ্বর থানার সোনপুর বাজারী এলাকার এমবিসি (জয়েন্ট ভেনশন) বেসরকারি ওসিপি-তে চালক হিসেবে কর্মরত প্রায় চার শত কর্মচারী তাদের বকেয়া বেতনের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে বনবাহাল মোড়ের কাছে সোনপুর বাজারীর কয়লা বোঝাই ডাম্পার থামিয়ে বিক্ষোভ করে।
বিক্ষোভকারী ও পেশায় চালক পবন সিং বলেন, কোম্পানিতে ৪০০ জনেরও বেশি কর্মী নিযুক্ত আছেন, যাদের বেতন গত ৬ মাস ধরে বকেয়া রাখা হয়েছে। বেতন না দেওয়ায় আমাদের বাড়ির আর্থিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। অবস্থা এমন যে, অধিকাংশ শ্রমিকের মাথায় বিশাল ঋণ। টাকার অভাবে আমরা চরম আর্থিক সংকটে। ঘরের খরচ, বাচ্চাদের স্কুলের ফি ও রোগীদের চিকিৎসায় অনেক অসুবিধা হচ্ছে। মালিকপক্ষের রাজকমল ও শ্রীধরের কাছে এ বিষয়ে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে এবং আমাদের পাওনা দাবি করা হয়েছে। কিন্তু মালিক শুধু বেতন দেওয়ার আশ্বাস দেন। অনেকবার কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করার আশ্বাস দেওয়া হলেও বৈঠক হয়নি। বর্তমানে আমরা সমস্যায় জর্জরিত, তাই এখন আত্মহত্যা করা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ নেই, তাই আমরা আন্দোলনের পথ অবলম্বন করতে বাধ্য হয়েছি।
শেখ হাসমত বলেন, শুধু বেতনই নয়, গত ১৪ মাস ধরে কোম্পানি আমাদের পি এফের টাকা জমা করেনি। এমনকি ৬ মাস আগেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না, সেই সময়েও আমাদের নির্ধারিত বেতনের চেয়ে অনেক কম টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকা থেকেও আলাদাভাবে পি এফের টাকা কেটে নেওয়া হয়েছিল। সংস্থাটি বলছে যে এখন পর্যন্ত আমরা ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা পি এফ-এ জমা করেছি কিন্তু সেই টাকা আমাদের পি এফের অ্যাকাউন্টে আসেনি, প্রশ্ন উঠছে যে আমাদের পি এফের টাকা গেল কোথায়? ফোন করলে মালিক পক্ষ ফোন ধরেন না এমনও অভিযোগ উঠেছে। এসব কারণে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়াজ তুলতে বাধ্য হয়েছি। বিক্ষোভের জেরে সোনপুর বাজারী এলাকার পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং রাস্তায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি পরে যায়।
খবর পেয়ে সোনপুর বাজারীর সিকিউরিটি ইনচার্জ বলরাম মুখার্জি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি সোনাপুর বাজারীর ব্যবস্থাপক কে ফোনে ঘটনাটি অবহিত করেন এবং তিনি শ্রমিকদের সাথে বসে খুব দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এরপর বিক্ষোভ শেষ হয়। এই বিক্ষোভের জেরে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সোনাপুর বাজারীর যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়।
বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ!
New Update