নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজস্থানের বিকানেরে হোলির দিন পালন করা হয় এক ব্যতিক্রমী ও ঐতিহ্যবাহী বিয়ের শোভাযাত্রা, যেখানে বর বিয়ের মিছিল নিয়ে কনের বাড়িতে যান, কিন্তু কনে ছাড়াই ফিরে আসেন। প্রায় ৩০০ বছর ধরে চলে আসা এই বিশেষ রীতি অনুসারে, একজন অবিবাহিত যুবক বিষ্ণুর সাজে সজ্জিত হয়ে বর হিসেবে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, যিনি এই বরের ভূমিকায় থাকেন, তার এক বছরের মধ্যেই বিয়ে হয়।
এই বছর ঋষি হর্ষ বিষ্ণুর সাজে বর হয়ে বিকানেরের মোহতা চক থেকে বিয়ের শোভাযাত্রার সূচনা করেন। ঐতিহ্যবাহী ব্যান্ডের সুর ও শুভ গানের মধ্য দিয়ে বরকে স্বাগত জানানো হয়। এই শোভাযাত্রা শহরের ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ বাড়িতে পৌঁছায়, যেখানে বাড়ির মহিলারা 'পোখনে' নামক বিশেষ আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন ও মঙ্গলগান গেয়ে বরকে আশীর্বাদ দেন। তবে এই বিবাহের শোভাযাত্রায় কোনো বিয়ের আসর বা সাত পাকে ঘোরার মতো কোনো অনুষ্ঠান হয় না। নির্দিষ্ট ঘরগুলিতে আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার পর বর আবার মোহতা চকে ফিরে আসেন।
প্রভাষক মুকেশ হর্ষের মতে, এই ঐতিহ্যগত শোভাযাত্রা তিন শতাব্দী ধরে চলে আসছে এবং প্রতি বছর এটি শহরের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়। বিয়ের শোভাযাত্রা যে পথ ধরে এগিয়ে যায়, সেই পথ বিয়ের উৎসবের আবহে পরিণত হয়। শঙ্খধ্বনি, ঝাড়বাতির আলো এবং শুভ গানের সুরে এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়, যা ঐক্য, সম্প্রীতি ও সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে ওঠে।
/anm-bengali/media/media_files/mkwqAJDioCJVllia4MD2.png)
এই শোভাযাত্রার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, বর হিসেবে শুধুমাত্র হর্ষ বর্ণের অবিবাহিত যুবক অংশ নিতে পারেন। বর বিষ্ণুর সাজে সজ্জিত হয়ে মাথায় ঐতিহ্যবাহী পাগড়ি, কপালে পেওয়াড়ি ও কুমকুম-অক্ষত তিলক, হলুদ রঙের পোশাক, গলায় ফুলের মালা ও জ্যাকেট পরে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বর পায়ে হেঁটে পুরো পথ অতিক্রম করেন এবং তার সঙ্গে যোগ দেন তার পরিবার, সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ও হর্ষ সম্প্রদায়ের মানুষ।
হোলির দিনে পালিত এই ব্যতিক্রমী রীতি শুধু ধর্মীয় আচার নয়, এটি প্রেম, আনন্দ ও ঐতিহ্যের এক অনন্য প্রতিফলন, যা বিকানেরের সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে।