নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নবরাত্রির শেষ দিনে কন্যা পুজোর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। উপবাস পালনকারী ভক্তরা মেয়েদের খাইয়ে উপবাস ভাঙেন। মেয়েদের দেবী মায়ের রূপ মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে মেয়েদের খাওয়ালে ঘরে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। কন্যাভোজের সময় নয়টি মেয়ে থাকা আবশ্যক। এটি বিশ্বাস করা হয় যে যদি মেয়েদের বয়স ১০ বছরের কম হয় তবেই তারা পুজোর জন্য উপযুক্ত হয়। কন্যা পুজোকরলে কখনই সেই ব্যক্তির অর্থের অভাব হয় না এবং তার জীবন সমৃদ্ধ থাকে ধন দৌলতে।
মূলত ব্রাহ্মণ কন্যা, কোনও কোনও ক্ষেত্র অন্য গোত্রের কন্যারও কুমারী পুজোর অংশ করা হয়। নারী শক্তিকে শ্রদ্ধা জানানোর এটা একটা রীতি। ১৯০১ সালে বেলুরমঠে ৯জন কুমারী মেয়ের পুজো করেছিলেন খোদ স্বামী বিবেকানন্দ। সেই রীতি এখনও বেলুরমঠে পালিত হয়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই রীতি পালন করা হয়ে থাকে।
নবরাত্রির সময় কন্যা পুজোর অনেক গুরুত্ব রয়েছে। সাধারণত নবমীতে মেয়েদের পুজোকরা হয় এবং খাওয়ানো হয়। তবে কিছু ভক্ত অষ্টমীতেও কন্যা পুজোকরে থাকে। নবরাত্রির সময় অষ্টমী ও নবমীর দিনে মেয়েদের খাওয়ানোর নিয়ম শাস্ত্রে বলা হয়েছে। এর পিছনে শাস্ত্রে উল্লেখিত নিয়ম হল ২ থেকে ১০ বছর বয়সী নয়টি মেয়েকে খাওয়ালে সমস্ত ধরণের দোষ দূর হয়।
মেয়েদের খাবার পরিবেশনের আগে দেবীকে নৈবেদ্য নিবেদন করুন এবং পুজোর জিনিসগুলি দেবীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করুন। এর পর মেয়েদেরকে পুজোকরুন। তাদের খাবার নিবেদন করুন। এর মধ্যে কোনও কন্যা খাবার গ্রহণ না করলে চাল, আটা, শাক-সবজি, ফলমূল রান্নার কাঁচামাল তাঁর বাড়িতে গিয়ে দিতে হবে।
২ বছর বয়সী মেয়েদেরকে কুমারী বলা হয়। তাদের পুজোয় দুঃখ ও দারিদ্র্যের অবসান ঘটে। তিন বছরের মেয়েকে ত্রিমূর্তি মনে করা হয়। ত্রিমূর্তি পুজো পরিবারে সম্পদ ও সমৃদ্ধি আনে। ৪ বছরের মেয়েকে কল্যাণী বলে মনে করা হয়। এদের পুজো করলে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। ৫ বছর বয়সী একটি মেয়েকে রোহিণী বলে মনে করা হয়। এদের পুজো করলে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৬ বছরের মেয়ের নাম কালিকা। এদের পুজো করলে জ্ঞান ও রাজযোগ লাভ হয়। ৭ বছর বয়সী মেয়েদেরকে চন্ডিকা বলে মনে করা হয়। এদের পুজো করলে মানুষ সমৃদ্ধি লাভ করে। ৮ বছরের মেয়েদেরকে বলা হয় শাম্ভবী। তাদের পুজো জনপ্রিয়তা খ্যাতি আনে। ৯ বছরের কিশোরীকে দুর্গা বলা হয়েছে। এদের পুজো করলে শত্রুরা পরাজিত হয় এবং অসম্ভব কাজ সম্পন্ন হয়। দশ বছরের মেয়েদেরকে বলা হয় সুভদ্রা। সুভদ্রার আরাধনা করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয় এবং সুখ লাভ হয়।