৬-এ ৬ তৃণমূল, পশ্চিমবঙ্গের মারাত্মক ফলাফলের পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যেও কি হল ভোটের ফল দেখুন -

খানিকটা অনুমানই সত্যি হল মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে।

author-image
Atreyee Chowdhury Sanyal
আপডেট করা হয়েছে
New Update
vote cfrggfjh

File Picture

নিজস্ব সংবাদদাতা: ৬-এ ৬। ফুল মার্কস পেয়ে তৃণমূল পাশ করেছে বিধানসভা উপনির্বাচনের পরীক্ষায়। এমনকি মাদারিহাট কেন্দ্র, যে কেন্দ্রটি এতোদিন বিজেপির দখলে ছিল, তাও এই প্রথমবার ছিনিয়ে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিশাল জয়কে অভিবাদন জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উচ্ছ্বসিত হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সকল কর্মীকে জানিয়েছেন শুভেচ্ছা। 

এদিন প্রথম জয়লাভ করেন কোচবিহার জেলার সীতাই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সংগীতা রায়। বিজেপি প্রার্থীকে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৬৩৬ ভোটে হারিয়ে জয়ের মুকুট পড়েন জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার স্ত্রী সংগীতা রায়। এদিনের জয় প্রত্যাশিত বলে আগেই জানিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। তবে তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বাসা ছিল দেখার মতো।

vvgggh

৬ কেন্দ্রের জয়ই উপভোগ করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রটি। ১৯৯৮ সালে মাদারিহাট বিধানসভা গঠন করা হয়। আর তারপর থেকেই শুরু হয় নির্বাচন। কিন্তু যতবার নির্বাচন হয়েছে ঠিক ততোবারই মুখ থুবড়ে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। কোন ভুল স্ট্র্যাটেজিতে তারা কোনও বারই জিততেন না, তা কখনওই টিএমসি বুঝে উঠতে পারেনি। ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার গঠন করার পরও মাদারিহাট কেন্দ্রের চিত্র এতোটুকুও বদলায়নি। তবে এবার এই প্রথমবার উপনির্বাচনে বদলালো সেই হারের ধারা। তৃণমূল জয় পেল এখানে। বিজেপি প্রার্থীকে প্রায় ২৮ হাজার ভোটে হারিয়ে জয়ী হলেন তৃণমূলের প্রার্থী জয়প্রকাশ টোপ্পো। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৭৯ হাজার ১৮৬টি।

বাঁকুড়া জেলার তালডাংড়া কেন্দ্রটিও ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল-কংগ্রেস। এখানে তৃণমূল প্রার্থী ফাল্গুনী সিংহবাবু ৯৮ হাজার ৯২৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তিনি বিজেপি প্রার্থী অনন্যা রায় চক্রবর্তীকে ৩৪ হাজার ৮২ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন।

madarihat

মেদিনীপুরের গণনায় জয়ের হাসি বজায় রাখলো তৃণমূল। সুজয় রাখলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভরসা। এদিন প্রথম থেকেই দেখা যায় সুজয় হাজরা এগিয়েছিলেন একাধিক ভোটে। আর এই ব্যবধান ক্রমশও চওড়া হয়েছে গণনা যত এগিয়েছে। গণনার শেষ রাউন্ডে গিয়েও দেখা গিয়েছে, তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা তখনও এগিয়ে রয়েছেন ৩৩ হাজার ৯৯৬ ভোটে। আর তাঁর কিছু পরেই ঘোষণা করা হয় যে মেদিনীপুর বিধানসভা উপ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা। ১ লক্ষ ১৫ হাজার ১০৪টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি। সেখানে বিজেপি প্রার্থী শুভজিৎ রায় পেয়েছেন ৮১ হাজার ১০৮টি ভোট। কার্যত এদিনের জয়ে খুশি এবং স্বস্তিতেই রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা।

উত্তর ২৪ পরগণা জেলায় দুই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়েছে। নৈহাটি আর হাড়োয়া। নৈহাটি কেন্দ্রে তৃণমূল-কংগ্রেস প্রার্থী সনৎ দে ৭৮ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তিনি বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্রকে ৪৯ হাজার ২৭৭ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন। 

vgghjnjj

অন্যদিকে হাড়োয়া কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শেখ রবিয়ুল ইসলাম ১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭২ ভোটে জয়ী হয়েছেন। তিনি প্রয়াত বিধায়ক হাজী নুরুল ইসলামের পুত্র। তবে বাবার থেকেও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন তিনি। আর এখানে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানও দখল করতে পারেননি। দ্বিতীয়তে গেরুয়াকে ছাপিয়ে গেছে আইএসএফ। এখানে প্রায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫০২ ভোটে হেরেছেন বিজেপি প্রার্থী বিমল দাস। এই বিরাট জয়কে মুখ্যমন্ত্রীকেই উৎসর্গ করেছেন ব্যারাকপুর লোকসভার সাংসদ তথা মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। 

আপাতত আগামী সোমবার তৃণমূলের দলীয় বৈঠকে এই জয় নিয়েই আলোচনা হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

এতো গেল পশ্চিমবঙ্গের কথা। এবার আশা যাক অন্যান্য রাজ্যের ভোটের ফলের দিকেও। খানিকটা অনুমানই সত্যি হল মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে। মহারাষ্ট্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাযুতি জোটই বিপুল সাফল্য পেল। সেখানে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারলো না বিরোধী জোট। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডে ফের ক্ষমতায় ফিরলো জেএমএম নেতৃত্বাধীন জোটও। 

মহারাষ্ট্রে মহাযুতি জোট এগিয়ে ২৩৬টি আসনে আর কংগ্রেস এগিয়ে ৪৮টি আসনে। অন্যদিকে ঝাড়খণ্ডে জেএমএম নেতৃত্বাধীন জোট এগিয়ে ৫৬টি আসনে। সেখানে বিজেপি মাত্র এগিয়ে ২৪টি আসনে।

publive-image

অন্যদিকে ওয়ানাড লোকসভা কেন্দ্রটি যেটি রাহুল গান্ধী জিতেছিলেন এবং পরবর্তীতে রায়বেড়িলি কেন্দ্রের জন্যে ছেড়ে দিয়েছিলেন, সেখানে সেটিকে নিজেদের দখলেই রাখলো কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীর বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা প্রায় ৪ লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন সেখানে। সেখানে হারিয়ে দিয়েছেন সিপিআই ও বিজেপিকে। 

উত্তরপ্রদেশে ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে এদিন ছিল উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা। এই ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬টি কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে বিজেপি। আর ২টিতে জয় পেয়েছে সমাজবাদী পার্টি এবং একটি জিতেছে রাষ্ট্রীয় লোক দল। 

উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথেও ছিল গণনা। সেখানটা এবারও ধরে রেখেছে বিজেপি। এছাড়া অন্যান্য রাজ্য গুলির ফলাফল খানিকটা এরকম – 

আসাম – ৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৩টি গেছে বিজেপির ঝুলিতে। ১টি জিতেছে ইউনাইটেড পিপলস্‌ পার্টি আর একটি জিতেছে অসম গণ পরিষদ। 

x

বিহার – ৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ২টি জিতেছে বিজেপি।

কর্ণাটক – ৩টি কেন্দ্রই জিতেছে কংগ্রেস।

কেরালা – ২টি কেন্দ্রের একটি জিতেছে কংগ্রেস এবং অন্যটি সিপিআইএম।

মধ্যপ্রদেশ – ২টি কেন্দ্রের একটি জিতেহে কংগ্রেস এবং অন্যটি বিজেপি।

পাঞ্জাব – ৪টি কেন্দ্রের ৩টি গেছে আপের ঝুলিতে। একটি পেয়েছে কংগ্রেস। 

রাজস্থান – ৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৬টি জিতেছে বিজেপি, একটি জিতেছে কংগ্রেস।