দিগবিজয় মাহালী, মেদিনীপুরঃ কোন পথ দিয়ে হাতির পালকে এলাকাছাড়া করা হবে, তা নিয়ে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। তা থেকেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। থানার অদূরেই পথ অবরোধ করে গভীর রাত পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। অবরোধ তুলতে ও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হল গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ ও বনদপ্তরকে। ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাত বারোটা নাগাদ মেদিনীপুর সদর ব্লকের পলাশিয়া এলাকায়। গত দু'দিন ধরে বাঁকুড়া থেকে আসা ৪০ টি হাতির একটি পাল প্রবেশ করেছিল মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়ার জঙ্গলে। রাত্রি আটটা নাগাদ হাতির পাল ভ্রমরমারা এলাকা থেকে পলাশিয়া গ্রামের কৃষি জমিতে প্রবেশের চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাড়িয়ে ফের জঙ্গলে ফেরত পাঠায়। এভাবে কয়েক ঘন্টা কাটার পর রাত বারোটা নাগাদ ভ্রমরমারা গ্রামের বাসিন্দারা হুলা জ্বেলে হাতির পালকে পলাশিয়া সংলগ্ন ধান জমির দিকে নিয়ে এলে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ওই সময় তর্কবিতর্ক শুরু হয়। তবে এই ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও চাঁদড়া রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় হাতি তাড়ানো নিয়ে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে গণ্ডগোল হয়েছিল। পলাশিয়া গ্রামের বাসিন্দা অমল দোলই বলেন, "হাতিকে জোর করে ভ্রমরমারা এলাকার বাসিন্দারা পলাশিয়ার ওপর দিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আমাদের এলাকার ধানের জমিতে ক্ষতি হবে। আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম বলে ওরা আমাদের গ্রামের দু'জনের ওপর হামলা চালিয়েছে। মলয় দোলই নামে একজনের মাথা ফেটেছে হুলা আঘাতে। অপর আরেকজন হুলার আগুনে জখম হয়েছেন।" এই ঘটনার প্রতিবাদে রাত বারোটার পর থেকে মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম সড়কের পলাশিয়াতে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বাসিন্দারা। তারা দাবি করেন, দ্রুত ক্ষতিপূরণ ও হাতির যাতায়াতের পথে আলোর ব্যবস্থা করার। প্রায় রাত দুটো পর্যন্ত এই অবরোধের জেরে বহু মালবাহী গাড়ি আটকে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসে গুড়গুড়িপাল থানার ওসি শুভঙ্কর রায় ও চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সুজিত পন্ডা। দীর্ঘ চেষ্টার পর সমাধানের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। হাতির পালকে পলাশিয়া দিয়ে তাড়িয়ে কংসাবতী নদী পার করে মানিকপাড়া এলাকায় পাঠানো হয়েছে বলে বন দফতর থেকে জানা গিয়েছে। হাতির যাতায়াতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধান জমির। চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সুজিত পন্ডা মানছেন, হাতি তাড়ানো নিয়ে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সমস্যা হয়েছিল। পরে আলোচনা করে সমাধান হয়েছে। সরকারি নিয়মানুসারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।