নিজস্ব সংবাদদাতাঃ দীপাবলি হল একটি পাঁচ দিন-ব্যাপী হিন্দু উৎসব। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশীর দিন ধনতেরস অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দীপাবলি উৎসবের সূচনা হয়। কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে ভাইফোঁটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উৎসব শেষ হয়।মহালয়ায় শ্রাদ্ধগ্রহণের জন্য যমলোক ছেড়ে যে পিতৃপুরুষগণ মর্ত্যে আগমন করেন বলে, তাঁদের পথ প্রদর্শনার্থে উল্কা জ্বালানো হয়। এ কারণে ঐ দিন আলোকসজ্জা ও বাজি পোড়ানো হয়। কেউ কেউ রাত্রিতে নিজগৃহে দরজা-জানালায় মোমবাতি জ্বালায়; কেউ বা লম্বা বাঁশের মাথায় কাগজের তৈরি ছোট ঘরে প্রদীপ জ্বালায়; একে আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় আকাশপ্রদীপ। দীপাবলি মানে আলোর উৎসব।
বাংলায় ‘দীপাবলি’, হিন্দিতে ‘দিওয়ালি’-যার সংস্কৃত অর্থ “প্রদীপের সারি”। এই দিন হিন্দুরা ঘরে ঘরে ছোটো মাটির প্রদীপ জ্বালেন। এই প্রদীপ জ্বালানো অমঙ্গল বিতাড়নের প্রতীক। হিন্দু ধর্মশাস্ত্র মতে, কালী হচ্ছেন অগ্নির সপ্তম জিহ্বা আর অগ্নি হচ্ছেন স্বয়ং ঈশ্বর; যা কালী বা শ্যামা নামে ভক্তদের কাছে উপস্থিত হয়। মাতৃ আরাধনার আরেক রূপ হচ্ছে শ্যামা পূজা। দীপাবলি হচ্ছে এই পূজার অন্যতম আকর্ষণ। এই দিন বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সারা রাত প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলে ঘরে লক্ষ্মী আসেন বলে হিন্দুরা বিশ্বাস করেন।
রামায়ণ অনুযায়ী, দীপাবলি পালনের পিছনে কারণ-শ্রী রামচন্দ্র লঙ্কার অধিপতি রাবণকে বধ করে ১৪ বছরের বনবাস শেষে অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তন করেন। তখন অযোধ্যাবাসীরা শ্রী রামচন্দ্রের এই দেশে ফেরার জন্য সারা রাজ্য জুড়ে একাধিক মাটির প্রদীপ বা দিয়া জ্বালিয়েছিলেন। অনেকের বিশ্বাস, দীপাবলির এই আলোকসজ্জা এবং শব্দবাজির পিছনে রামের অযোধ্যায় ফেরার উৎসবই মূল কারণ।