নিজস্ব সংবাদদাতা: বুধবার সন্ধ্যার পর মর্মান্তিক দুটি পথ দুর্ঘটনা ঘটলো মেদিনীপুর সদর মহকুমার দুটি স্থানে। প্রথমটি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ শালবনীতে সিমেন্ট বোঝায় বেপরোয়া লরি জাতীয় সড়ক থেকে সোজা গিয়ে ঢুকে গেল একটি চায়ের দোকানে। ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হলেন চায়ের দোকানে থাকা এক মহিলা, গুরুতর আহত লরির চালকও। অন্যদিকে গুড়গুড়িপালে বেপরোয়া মোটরবাইক রাস্তার পাশে থাকা এক যুবককে ধাক্কা মারলে তার মৃত্যু হয়।
এদিন সন্ধ্যাবেলা শালবনীর গোবরু বাজারে অন্যান্য দোকানগুলির মত চায়ের দোকান তখনো খুলে রেখেছিলেন এক মহিলা। দিপালী সিং নামে ওই মহিলা ও তার স্বামী দুজনে মিলে ওই চা দোকানটি চালান। সন্ধ্যার ওই সময়ে দিপালী দেবী দোকানে একাই ছিলেন। হঠাৎ জাতীয় সড়ক ধরে সিমেন্ট বোঝায় একটি লরি বেপরোয়া গতিতে শালবনীর দিকে যাওয়ার সময় হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে চা দোকান ভেঙে ভেতরে। দোকান ভেঙে একেবারে অনেকটা ভেতরে ঢুকে যায়। এতে দোকানের ভেতরে থাকা দিপালী সিং চাপা পড়ে যান। সমানভাবে আহত হন লরির চালকও।
ঘটনার দৃশ্য দেখে ছুটে আসেন স্থানীয়রা সকলে। সিমেন্ট বোঝাই লরিকে সরানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। স্থানীয় একটি হাইড্রা গাড়ি এনে সিমেন্ট বোঝায় লরিকে টেনে বের করে চাপা পড়ে থাকা দুজনকেই উদ্ধার করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকেই উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। পরিস্থিতি সামাল দেয় শালবনী থানার পুলিশ। কি কারনে এই ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন উঠেছে। কেউ মনে করছেন গাড়ি চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন হয়তো, কেউ বলছেন, চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। অনেকেই মনে করছেন স্টিয়ারিং লক হয়ে সম্ভবত এই ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে গুড়গুড়িপাল এলাকাতে। রাত ৯ টা নাগাদ ওই এলাকার বাসিন্দা সুনির্মল সেন পাশের ক্লাব থেকে হেঁটে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পিচ রাস্তার পাশ ধরেই যাচ্ছিলেন তিনি। ওই সময় ঝাড়গ্রামের দিক থেকে প্রচন্ড গতিতে আসা একটি বুলেট মোটরবাইক তাকে ধাক্কা মেরে অনেকটা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায়। পরে বাইকটি তার উপরে চাপা পড়ে যায়। ওই সময় বাইকে দুজন ছিলেন। স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে উদ্ধার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বাইক চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। অন্যদিকে বাইকে চাপা পড়ে থাকা সুনির্মল সেন মারাত্মকভাবে আহত হন। পরিবারের লোকেরা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন সুনির্মল সেনকে। ঘটনার পর সেখানে ছুটে আসে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ। পুলিশ বাইক ও চালককে আটক করেছে। বাইক আরোহী মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গুড়গুড়িপাল থানার পুলিশ। শোকের ছায়া নেমেছে গোটা এলাকায়।