প্রকৃতিকে সন্তুষ্ট করতে করা হয় পাহাড়ের পুজো! জানেন এর ব্যাপারে?

পাহাড়ের পুজো হয় বাংলাতেই। জানেন এই ব্যাপারে?

author-image
Anusmita Bhattacharya
আপডেট করা হয়েছে
New Update
COVER-Recoveredpujo

নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: প্রকৃতিকে সন্তুষ্ট করতে পাহাড়ের পুজো করা হয়। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের তৃতীয় শনিবার বেলপাহাড়ির কানাইসোর পাহাড়ে পুজো দেওয়া হয়। পুজোয় হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। 

এবারও ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী এলাকায় কানাইসোর পাহাড় পুজোয় সামিল হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের তৃতীয় শনিবার থেকে তিন দিন ধরে হয় মেলা। মেতে ওঠেন বাংলা, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও ওড়িশা রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ। ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি সীমান্তবর্তী এলাকায় গাড়রাসিনি, খড়িডুংরিসহ যে সমস্ত পাহাড় পুজো অনুষ্ঠিত হয় তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় পাহাড় পুজো হল এই কানাইসোর পাহাড় পুজো। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কানাইসোর পাহাড় পুজো অনেক প্রাচীন। মূলত এখানকার আদি জনজাতি বাসিন্দারা চাষবাসের আগে প্রকৃতিকে সন্তুষ্ট করতে এই পাহাড়ের পুজো করে থাকেন। লোকবিশ্বাস মতে এই পাহাড় পুজো করলে চাষবাস ভাল হবে। অতিবৃষ্টিতে কেউ বানভাসি হবে না। হড়কা বান হবে না। তাই চাষবাস শুরু করার আগে কৃষিজীবী মানুষ পাহাড়ে পুজো দেন। স্থানীয় সুত্র মতে, বহু বছর আগে এলাকায় প্রবল বন্যায় ঘরবাড়ি ,গরামথান বা গ্রাম রক্ষার দেবতা সমস্ত কিছু ভেসে গিয়েছিল। পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী ঢেঙাম গ্রামের বাসিন্দারা সেই সময় পাশাপাশি অন্যান্য গ্রামবাসীদের সাথে সভা করে গ্রাম রক্ষার দেবতাকে এই পাহাড়ে প্রতিষ্ঠিত করেন। সেই সময় থেকেই এই পাহাড়ে ঢেঙাম গ্রামের মাহালি সম্প্রদায় পুজারী হিসেবে রয়েছে। অন্যান্য গরামথানের মত পোড়া মাটির হাতি-ঘোড়ার মূর্তি উপবিষ্ট করে পুজো করা হয়। পুজোয় মুরগি বা ছাগ বলি প্রচলিত রয়েছে। পাহাড় পুজো ঘিরে এখানে বড় আকারের মেলা বসে। এই মেলাতে লোক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমস্ত রকমের বাদ্যযন্ত্র ও কৃষিকাজের নানান সামগ্রী পাওয়া যায়। পাহাড় পুজোর পরের দিন রবিবার পাশেই কেবলমাত্র আদিবাসীদের বারাঘাটে পৃথক পাহাড় পুজো ও আচার অনুষ্ঠান পালিত হয়। আদিবাসীদের পাহাড় পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শনিবার থেকেই দূর দূরান্ত থেকে লোকজন পুজোর জন্য আত্মীয়দের বাড়িতে এসে থাকছেন।

Adddd