জঙ্গলের হাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে লোকালয়ে! বাড়ছে ক্ষয়-ক্ষতি

বেড়েই চলেছে হাতির তান্ডব। ক্ষয় ক্ষতিও বাড়ছে। বনদফতরের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। কেন জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাতি? ঝাড়গ্রাম-মেদিনীপুর জুড়ে শুধুই আতঙ্ক।

author-image
Pallabi Sanyal
New Update
az


নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর : দলছুট হাতির তাণ্ডবে এক রাতেই ভেঙে তছনছ ১৫ টি বাড়ি, রাতভর আতঙ্কে চাঁদড়।  দল বিচ্ছিন্ন একটা দাঁতাল হাতির তাণ্ডবেই তছনছ মেদিনীপুর সদর ব্লকের চাঁদড়া এলাকা। ঘুমন্ত বাসিন্দাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা। কেউ হামাগুড়ি দিয়ে চুপিসারে বাড়ি ছেড়ে রক্ষা পেয়েছেন। কেউ আবার কাঁথা ঢাকা নিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। সকাল থেকেই আতঙ্কের পরিবেশ ওই এলাকায়। গত এক সপ্তাহ ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর সদর ব্লক এলাকার চাঁদড়াতে প্রবেশ করেছিল একশোটির বেশি হাতি। ঝাড়গ্রাম জেলাতে ব্যাপক ক্ষতির পর সেখানকার লোকজনের রোষ থেকে বাঁচতে হাতির পালকে প্রবেশ করানো হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। তবে হাতির পালের হানায় বাড়ি না ভাঙলেও দলছুট দাঁতালে তাণ্ডবে নাজেহাল বনদপ্তর। শুক্রবার ভোররাত চাঁদড়া রেঞ্জ এলাকার কেশাশোল ও বেলিয়া এলাকায় দল বিচ্ছিন্ন একটি হাতি তাণ্ডব শুরু করে। পনেরোটি বাড়ি ও দোকান ভেঙে তছনছ। ছিটেবেড়ার খাবার দোকান ভেঙে খেয়ে ফেলেছে মিষ্টিও। কেশাশোল এলাকার বাসিন্দা ভারতী রায় বলেন, "আমি বাড়ির ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ হাতি জানালা দিয়ে শুঁড় ঢোকাচ্ছে বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টা করি। আমি হামাগুড়ি দিয়ে লুকিয়ে সরে যেতেই দেওয়াল ভেঙে পড়ে যায় আমার বিছানার ওপরে। আমি থাকলে হয়তো মারা পড়তাম।" ওই গ্রামের অপর বাসিন্দা সোনালী রায় বলেন, "আমরা স্বামী-স্ত্রী বাড়ির মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখলাম ঘরের মধ্যে শুঁড় প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে হাতি। অন্ধকারে বুঝতে পেরেছিলাম আমাদের খোঁজ করছে। আমরা দুজনেই কাঁথা ঢাকা দিয়ে দেওয়ালের পাশে সরে যাই। কিন্তু তারপর বাড়ির দেওয়াল ভেঙে ফেলে। বাইরে থেকে লোকজন চেঁচামেচি করে হাতিকে সরিয়েছে।" 

দলছুট ওই হাতিটি পরে পিচ রাস্তার পাশে থাকা বেলিয়া এলাকার একটি দোকানে হামলা করে। ছিটে বেড়ার ওই দোকান ভেঙে অন্যান্য জিনিস তছনছ করেছে। পাশের তিনটি বাড়িও ভেঙে দেয় হাতিটি। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মালিক নরেন্দ্রনাথ সহিস বলেন, "রাত্রি আড়াইটা নাগাদ হাতিটি এসে তাণ্ডব শুরু করে। দোকান ভেঙে মিষ্টি, আলু খায় ও অন্যান্য সব জিনিস তছনছ করেছে। গ্রামেও তিনটে বাড়ি ভেঙে দিয়েছে।" অন্যদিকে শালবনীর পাথরি এলাকায় এক বাসিন্দা শুক্রবার সকালে মাঠে ধানের চাষের কাজ করছিলেন। অতর্কিত হাতি হামলা করলে তিনিও জখম হয়েছেন। বনদপ্তরের চাঁদড়া রেঞ্জ অফিসার সুজিত পন্ডা জানান, "দল বিচ্ছিন্ন এই হাতিটি প্রায় ১৫টি বাড়ি ভেঙেছে। গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়েছে। আর যাতে ক্ষতি না করতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"