নিজস্ব প্রতিবেদন : অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা, যার ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বলাগড়ের জিরাট পঞ্চায়েতের চর খয়রামারী এলাকা পুরোপুরি জলে ডুবে গেছে। গঙ্গার বাঁধের ছাড়ার ফলে নদী ফুলে-পেঁপে উঠেছে, এবং চর খয়রামারী থেকে জিরাট সংযোগকারী একমাত্র কালভার্টটি গঙ্গার জোয়ারের জলে ভেঙে যাওয়ায় গ্রামটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বলাগরের শ্রীপুরের বাবুচর, সিজা কামালপুর পঞ্চায়েতের বানেশ্বরপুর, এবং আশ্রমঘাট সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় জল থই থই করছে। রাস্তা-ঘাট ভেসে গেছে, ফলে কৃষকদের মধ্যে জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। বিশেষ করে কৃষকরা বিঘে-পর-বিঘে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় মাথায় হাত।
খানাকুল ১ ও ২ নম্বর ব্লকের ২৪টি পঞ্চায়েত এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে, যেখানে মারোখানা, পানশিউলি, পলাশপাই, জগৎপুর, নন্দনপুর এবং রাজহাটি গ্রামে পরিস্থিতি খুবই খারাপ। বিভিন্ন স্থানে জল কোমর সমান ও বুক সমান অবস্থায় রয়েছে, ফলে বহু মানুষ বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। মোটের ওপর, দু'লক্ষের বেশি মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। কিশোরপুর এলাকায় জলের তোড়ে আস্ত পাকা বাড়ি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে গেছে, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। উদ্ধারকাজের জন্য আরামবাগ ও পুরশুড়ার ত্রাণ শিবিরে বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এবং মোবাইল নেটওয়ার্কও অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
ডিভিসির ছাড়া জলে ভাসছে একের পর এক জেলা। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। জাতীয় সড়কের ওপর জল থই থই করছে, আর স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে মাছ ধরতে ব্যস্ত। ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ড জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে এবং পাঁশকুড়া স্টেশন চত্বরেও জনতা ভিড় জমাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলি ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে, কিন্তু বিপুল সংখ্যক জলবন্দি মানুষের সহায়তা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। সকলেই আশা করছেন, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং পরিস্থিতির উন্নতি হবে।