নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর কলেজে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলো কলেজ চলাকালীন সোমবার বিকেলে। কলেজের ভেতরেই বাঁশ লাঠি নিয়ে একে অপরকে মারধরের ঘটনায় রক্তাক্ত হলেন কয়েকজন ছাত্র। যাদের মধ্যে একজনকে ভর্তি করা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে হাজির হয় কেশপুর ও আনন্দপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকে এফআইআর করেছেন প্রিন্সিপাল। ঘটনায় একটি গোষ্ঠী অভিযোগ করেছেন অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ৷
প্রিন্সিপালের দাবি- “ বাইরে থেকে কয়েকজন এসে কোদাল দিয়ে কলেজের গেটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেছিল৷ তারপর সংঘর্ষ। আমি কড়া ব্যাবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি পুলিসকে। গত কয়েকদিন ধরেই কেশপুর কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজনকে ঘিরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই কারণেই নাকি নবীন বরণ অনুষ্ঠানের বিশাল আয়োজন বাতিল করা হয়। তারপরেও অভ্যন্তরীণ উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিলই। এর মাঝে সোমবার বিকেলে হঠাৎ কলেজ চলাকালীন কলেজের ভেতরে একদল ছাত্রের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। লাঠি-সোটা নিয়ে একে অপরকে মারধর হয় কলেজ চত্বরে। ঘটনায় প্রায় পাঁচ জন কম বেশি আহত হয়।
তবে তাদের মধ্যে এক প্রথম বর্ষের ছাত্রের কানের অনেকটা অংশ কেটে যাওয়ায় রক্তাক্ত অবস্থায় কেশপুর হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেখ আসাদুল্লা নামে ওই ছাত্র মেদিনীপুর হাসপাতালে বলেন- কলেজের রাজনীতির সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত নয়। আমি ক্রিকেট খেলার পর প্রিন্সিপালের রুমের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখনই কয়েকজন সেখানে অতর্কিত মারধর শুরু করে দেয়। ওদের দুটো গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট চলছিল। আমাকে মাঝখানে প্রচন্ডভাবে মারপিট করে দেয় ওরা। ওদের এই রাজনীতির সঙ্গে কোনোভাবেই আমি জড়িত নই। কলেজের অপর একছত্র একই দাবী করে বলেন- তৃণমূলের দুটো গোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘর্ষ হচ্ছিল। আমরা খেলার শেষে প্রিন্সিপালের রুমের সামনে আইডেন্টি কার্ড আনতে গিয়েছিলাম। তখনই এই সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছে। তবে বাইরে থেকে বেশকিছু লোকজন ঢুকে এই সংঘর্ষ করেছে ঘটনার পরে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হলে সেখানে ছুটে আসে কেশপুর ও আনন্দপুর থানার পুলিশ। ওই এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনীর মোতায়েন করে দেওয়া হয়।
সংঘর্ষ স্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। কলেজের প্রিন্সিপাল দীপক কুমার ভূঁইয়া বলেন- আমি বাইরের কাউকে কখনো ভেতরে অনুমতি দিইনা৷ আমি ক্লাস চলাকালীন দেখতে পেলাম বাইরে থেকে কয়েকজন কোদাল দিয়ে কলেজ গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকেছিল। সে সময় পুলিশ নিরাপত্তা রক্ষী সবই ছিল। তারপরেও এই ঘটনা ঘটলো। এই ঘটনা কাঙ্ক্ষিত নয়। পুলিশের কাছে এফআইআর করা হচ্ছে। কড়া ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে পুলিশকে। সিসিটিভি ফুটেজ হ্যান্ডওভার করে দেওয়া হচ্ছে পুলিশকে।