নিজস্ব সংবাদদাতা, পাঁশকুড়াঃ আবাস যোজনা নিয়ে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। এমনকি এমনও অভিযোগ রয়েছে পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবার দ্বিতীয়বার নতুন করে আবাস যোজনার বাড়ি নিতে দেখা গেছে। সেক্ষেত্রে এবার এক ভিন্ন চিত্র দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ১নং ব্লকে। জানা গিয়েছে যে, পাঁশকুড়ার নস্করদিঘী গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতি সপরিবারে মাটির বাড়িতে বসবাস করেও আবাস যোজনার বাড়ি পেয়েও ফিরিয়ে দিলেন প্রশাসনকে।
পাঁশকুড়ার নস্করদিঘীর বাসিন্দা শক্তিপদ মান্না, একদিকে পেশায় কৃষক হলেও রাজনীতির ময়দানে তিনি তৃণমূলের বুথ সভাপতি। দীর্ঘ জীবন রাজনীতিতে থেকে শাসকদল তৃণমূলের ঝান্ডা কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন। বর্তমানে তিনি তৃণমূলের বুথ সভাপতি। ২০১৬ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের টিকিটে জয় লাভ করে অনাস্থা ভোটে ২বছরের জন্য উপপ্রধানের পদে বসেন শক্তিপদ মান্না। এমনকি তাঁর স্ত্রী তিলকা মান্না পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে ভোটে দাঁড়ালে মাত্র কয়েকটা ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু তবু দলকে ভালোবেসে আজ পর্যন্ত তৃণমূলের হাত ধরে এগোতে চায় শক্তিপদ মান্নার পরিবার। এজবেস্টার দেওয়া মাটির বাড়িতেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি।
তবে ২০১৩ সালে একটা পাকা বাড়ির পাওয়ার জন্য আবাস যোজনার তালিকায় তিনি নিজের নাম নথিভুক্ত করেছিলেন, সার্ভে হওয়ার পর তাঁর আবেদন মঞ্জুর হলে নতুন করে ২০২৪ সালে আবাস যোজনা লিস্টে শক্তিবাবুর নাম আসে। এমনকি কিছুদিনের মধ্যেই বাড়ি করার জন্য আবাস যোজনার টাকা তিনি পেতেন, কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি আবাস যোজনার বাড়ি পেয়েও আবাসের বাড়ি নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন নিজের দলকে, এবং লিখিত ভাবে বিডিও অফিসে জমা দেন তিনি। পাঁশকুড়া এক নম্বর ব্লকে গিয়ে বিডিওর কাছে তিনি লিখিত জমা দেন তিনি আবাস যোজনার বাড়ি নেবেন না। তবে এখনো তিনি তাঁর পরিবার নিয়ে মাটির বাড়িতে বসবাস করলেও তার দুই ছেলে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে উপার্জন করতে শিখেছে, তবে ছেলেদের মধ্যে কেউই সরকারী চাকুরীজীবী নয়।
উল্লেখ্য, ছেলেদের উপার্জনের টাকায় ইতিমধ্যেই বাড়ি তুলেছেন। যার ফলে আবাস যোজনার বাড়ি করার জন্য সরকার থেকে যে টাকা তিনি পেতেন তা তিনি নেননি। শুধু তাই নয়, যারা যোগ্য প্রাপক বঞ্চিত হচ্ছেন, তাঁরা বাড়ি পাক তিনি এমনটাই চান। যে কারণে আবাস যোজনার বাড়ি ফিরিয়ে দিলেন তিনি। তাঁর এমন কাজে সাধুবাদ জানিয়েছেন ব্লক প্রশাসন ও শাসকদলের নেতৃত্বরা।