নিজস্ব সংবাদদাতাঃ খুঁড়িয়ে চলছিল দলছুট এক দাঁতাল। কারণ কি খতিয়ে দেখতে ট্রাঙ্কুলাইজ করা হলো হাতিটিকে। রঞ্জার গভীর জঙ্গলে শুক্রবার ভোর থেকে নেমেছিলেন বনকর্মীরা। হাতিটির অবস্থান চিহ্নিত করে গভীর জঙ্গলে ট্রাঙ্কুলাইজ করা হয় শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ। হাতিটি ঘুমের ঘোরে নিস্তেজ হতেই তার চোখে কাপড় বেঁধে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে শুরু হয় চিকিৎসা। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী থানার অন্তর্গত রঞ্জা বিটের বাঁকিশোলের জঙ্গলে। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ওই হাতিটি বাঁকুড়া থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রবেশ করেছিল। হাতিটির পায়ে আঘাত থাকায় দলের সঙ্গে হাঁটতে পারছিল না। ফলে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছিলেন বনকর্মীরা। কারণ অনুসন্ধান শুরু হয়। বৃহস্পতিবার হাতিটির অবস্থান চিহ্নিত করা হয় রঞ্জা এলাকার জঙ্গলে।
চিকিৎসকের পরামর্শ মত শুক্রবার ভোর থেকে ব্যবস্থা শুরু হয়। ঝাড়গ্রাম থেকে আসা চিকিৎসকের পরামর্শ মত শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ ওই হাতিটিকে জঙ্গলের ভেতরে ট্রাঙ্কুলাইজ করা হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতিটি ঘুমের ঘোরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। দ্রুত সেখানে থাকা বনকর্মী ও স্থানীয়রা তার চোখে কাপড় বেঁধে কাঠ দিয়ে আটক করে ফেলে। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখতে পান তার ডান পায়ে চোট লেগেছিল। ভেতরে পুঁজ জমে গিয়েছিল। দু'ঘণ্টা ধরে চলে জঙ্গলের ভেতরেই তার চিকিৎসা। বেলা ১১ টার পর তাকে ছেড়ে সরে যায় সকলে। দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করেন বনকর্মী ও চিকিৎসক। চিকিৎসক চঞ্চল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "কোথাও গর্তে পড়ে বা কোন কারণে পা মোচকে গিয়েছিল। যে কারণেই সে হাঁটতে পারছিল না। চিকিৎসা করা হয়েছে, সুস্থ হয়ে উঠবে। "
জানা গিয়েছে, হাতিটি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে। হাতিটির জন্য নানা রকম খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুক্রবার ও শনিবার দুদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে ঝাড়গ্রামে ট্রাঙ্কুলাইজের পর মৃত্যু হয় একটি হাতির। যা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। সেই দিক থেকেও এবারে সজাগ ছিল বনদপ্তর। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) অশোক প্রতাপ সিং, মেদিনীপুর বন বিভাগের ডিএফও দীপক এম, এডিএফও শুভাশিস ঘোষ সহ অন্যান্য বন আধিকারিকরা। বনদপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, "গত চার থেকে পাঁচ দিন ধরে তার চিকিৎসা চলছিল। আজ ট্রাঙ্কুলাইজ করে তার ফাইনাল চিকিৎসা করা হলো। হাতিটি সুস্থ আছে। "