ক্ষুদিরাম বসু ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মেদিনীপুর শহরের কাছাকাছি (বর্তমান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা) কেশপুর থানার অন্তর্গত মৌবনী (হাবিবপুর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।মেদিনীপুরে তার বিপ্লবী জীবনের অভিষেক।
নিজস্ব প্রতিনিধি,কেশপুর: ব্রিটিশদের দেশ ছাড়া করতে হবে, এটাই ছিল তার প্রাণপণ অঙ্গীকার! অত্যাচারী কিংসফোর্ডকে মারতে ধরা পড়লেন ব্রিটিশ পুলিশের হাতে। বিচারে ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসির আদেশ দেন বিচারক। ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট, বিহারের মুজাফফরপুরে ফাঁসি হয় ক্ষুদিরাম বসুর! ক্ষুদিরাম বসুর পক্ষে লড়েছিলেন একদল বাঙালি আইনজীবী। তবে শেষ পর্যন্ত ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয়। ক্ষুদিরামের ফাঁসির পর উপেন্দ্রনাথ সেন সহ একদল বাঙালি আইনজীবী তার দেহ সৎকারের জন্য গণ্ডক নদীর তীরে নিয়ে আসেন। যে খাটিয়ায় শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর মৃতদেহ গণ্ডক নদী তীরে আনা হয়, সেই খাটিয়াতে লেখা ছিল বন্দেমাতরম শব্দটি। ক্ষুদিরাম বসুর মৃতদেহ সৎকারের আগে যখন সামাজিক নানা কাজকর্ম সম্পন্ন হচ্ছে তখন ফাঁসিতে ঝোলানো ক্ষুদিরাম বসুর মাথা নুইয়ে পড়ছিল বুকের উপর। তখন একজন বলে ওঠেন, যিনি ব্রিটিশ শাসনের সামনে মাথা নত করেনি তার মাথাটা তুলে রাখা হোক। অতঃপর আগুনের লেলিহান শিখায় চিতা ভস্মে পরিণত হয় স্বল্পবয়সী শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর নিথর দেহ। ইতিহাস গবেষক পরেশ বেরা জানিয়েছেন, আইনজীবী উপেন্দ্রনাথ সেন তার এক প্রবন্ধে লিখেছেন, ক্ষুদিরামের চিতাভস্মে জল ঢালার পর চিতাভস্ম রাশি আইনজীবী উপেন্দ্রর বুকে লেগেছিল। এরপর থেকে সেখানে সাদা দাগ হয়ে যায়। যদিও ক্ষুদিরাম বসুর মৃত্যুর দিন পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না মুজাফফরপুরে। ইচ্ছে থাকলেও যেতে পারেননি ক্ষুদিরাম বসুর পরিবারের কেউই, জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তবে আগামী প্রজন্ম ভুলতে বসেছে ক্ষুদিরাম বসুর আত্ম বলিদান এর ইতিহাস।