হরি ঘোষ, পাণ্ডবেশ্বর : এক মায়ের কর্তব্য পালনের ভয়কে জয় করার কাহিনী। পাণ্ডবেশ্বর এর কুমারডিহি ও সিপি কলোনি এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মামনি রুইদাস। বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। বর্তমানে দুই সন্তানের মা। স্বামীর সঙ্গে বর্তমানে নেই তেমন বনিবনা, দুই সন্তানকে নিয়েই সংসার বছর ২৯ এর মামনি রুইদাসের । হঠাৎ করে স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়েই টোটোর স্টিয়ারিং ধরেছেন মামনি। পাণ্ডবেশ্বরের কুমারডিহি গ্রামের রুইদাস পাড়ার সুকুমার রুইদাসের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে হয় তার। বর্তমানে ওসিপি কলোনি এলাকায় বাস করছেন মামনি । বাড়িতে তার দুই ছোট্ট সন্তান । অভাবের সংসারে ছেলেমেয়েদের মুখে দুবেলা দুটো ভাত তুলে দিতে এই বয়সেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন মামনি। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েই কিনেছেন টোটো। টোটো চালানোর পাশাপাশি বাড়িতে পরিচারিকার কাজও করেন মামনি। যে সময়ে নারীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন সারা দেশ জুড়ে, ঠিক সেই মুহূর্তেই সমস্ত বিপদ,ভয় কে জয় করেই টোটোর স্টিয়ারিং ধরেছে মামনি শুধুমাত্র তার সংসারে ছেলেমেয়েদের মুখে দুবেলা দুটো অন্ন তুলে দিতে। দিনে দুপুরে রাত্রে পুরুষযাত্রী নিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে নিয়ে যেতে কোনরকম মনে ভয় বা সংশয় লাগে না ? প্রশ্ন করতেই অকপট উত্তর দিলেন মামনি। গৃহবধূ মামনি জানান, ''লোন নিয়ে টোটো কিনেছি, তাই লোনের বোঝা রয়েছে মাথার উপর।'' তার ওপর সংসারে দুই সন্তান। তাই শুধু টোটো চালিয়েই হয় না, সকালে টোটো নিয়ে বেরোনোর আগে দুই চার জনের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে নিজের বাড়ি ফিরে এসে ছেলেদের জন্য রান্না করে তারপর টোটো নিয়ে বের হতে হয় তাকে। মনে ভয় সংশয় থাকলেও কোনো উপায় নেই পেটের দায় বড় বালাই বলেন মামনি। তবে মামনি জানান, রাত্রিবেলা টোটো চালান না। যদি কোনো কারণে যাত্রী নিয়ে যেতে গিয়ে রাত্রি হয়ে যায় তখন মামনি তার ভাইকে ডেকে নেন। যাত্রীদের তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েই ভাই-বোন পৌঁছে যান বাড়িতে ।