নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষকিরা এলাকার ঘটনা। কিছুদিন আগেই বন্যার কারণে শিলাবতী নদীর পাড়ের রাস্তা ধসে নদীতে পড়ে যায়। এর ফলেই কৃষি প্রধান এলাকার শতাধিক পরিবার কৃষি কাজে ব্যবহৃত মালপত্র থেকে কৃষি পণ্য নিয়ে রাস্তার অভাবে যাতায়াত করতে পারছিলেন না। কারণ, এই গ্রামের বাসিন্দারা সব থেকে বড় সমস্যায় আছেন যোগাযোগের। শিলাবতী নদীর উপর ছোট্ট ভাঙাচোরা কাঠের সাঁকোয় যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন।ওই সাঁকো দিয়ে শুধুমাত্র হেঁটেই পারাপার করতে পারেন গ্রামের মানুষজন। তাই কৃষিপণ্যসহ ভারী মালপত্র নিয়ে যাবেন কি করে। যোগাযোগের এমন বেহাল অবস্থায়।সেই কারণে নিজেরাই চাঁদা তুলে যোগাযোগের পথ তৈরি করলেন পাশাপাশি বন্যায় ধসে যাওয়া নদী পাড়ের বেশকিছু অংশ নিজেরাই বালির বস্তা ও বাঁশ দিয়ে তা বাঁধার ব্যবস্থা করেছেন।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, ঘোষকিরাসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি এলাকার মানুষের দাবি এই দুর্দশার কথা একাধিকবার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে সমস্ত প্রশাসনের আধিকারিকদের বছরের পর বছর জানানো হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। ভোট আসলেই মেলে প্রতিশ্রুতি,তারপরে সব ভুলে যান নেতারাও।তাই গ্রামের মানুষজন নিজেদের উদ্যোগেই বাড়ি প্রতি চাঁদা তুলে লক্ষাধিক টাকা ব্যায়ে নিজেরাই অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করতে শুরু করল।বাঁশ,থলি দিয়ে নদীর ধস মেরামত করে,জেসিপি মেশিন লাগিয়ে নদীর পাড়ের বালি দিয়ে নদীর পাড় হয়ে নদীর উপর দিয়েই রাস্তা তৈরি করলেন তারা।নদীর জল কম সেই জল যাতে আটকে না যায় তারজন্য নদীর উপর বসানো হচ্ছে কংক্রিটের সাঁকোও।
গ্রামবাসীদের দাবি,বন্যা বা নদীর জল বাড়লে রাস্তা ধুয়ে নিয়ে চলে যাবে কিন্তু তাদের কোনো উপায় নেই। কৃষকরা জানাচ্ছেন,এসময় চাষের মরসুম গ্রামের ও কৃষি জমির মাঝে রয়েছে শিলাবতী নদী তাই নদী পেরিয়ে একাধিক গ্রামের কৃষকদের কৃষি জমিতে কৃষি কাজে যেতে হয়। এসময় ধান তুলে বাড়ি নিয়ে যাওয়া ও তারপর আলু লাগানোর কাজ শুরু হবে,তারজন্য রাসায়নিক সার থেকে আলু বীজ সহ গাড়ি কৃষি জমিতে যাতায়াতের প্রয়োজন। তারজন্য যাতায়াতের কোনো রাস্তা না থাকায় বাধ্য হয়ে নিজেরাই কয়েকটি গ্রাম চাঁদা তুলে এই উদ্যোগ নিয়েছে।
যদিও এ বিষয়ে ভগবন্তপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আশরাফুল মল্লিক বলেন,'' বিষয়টি আমি শুনেছি। গ্রামবাসীদের উদ্যোগ ভালো। '' গ্রামের কৃষকদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি। তবে গ্রামের বাসিন্দা থেকে কৃষকদের দাবি,'' ভাঙাচোরা কাঠের সেতুর পরিবর্তে গাড়ি চলাচল করা যাবে এমন কোনো স্টিল ব্রীজ বা স্থায়ী কংক্রিটের ব্রীজ না হলে এই সমস্যার সমাধান হওয়ার নই।নাহলে প্রতিবছরই তাদের এমন ভোগান্তির শিকার হতে হবে বলে দাবি গ্রামের কৃষকদের।