নিজস্ব সংবাদদাতা, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথ মসৃণ রাখতে আগে থেকেই সতর্ক বনদপ্তর। এই মুহূর্তে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ৫০টির বেশি হাতি রয়েছে। ফলে সমস্ত রেঞ্জ অফিসগুলিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার দিনগুলিতে চাঁদড়া, পিড়াকাটা, ভাদুতলা, গোদাপিয়াশাল, আড়াবাড়ি, লালগড়, গোয়ালতোড়, গড়বেতা রেঞ্জের বনকর্মীরা জঙ্গল রাস্তায় পাহারায় থাকার পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের গাড়িগুলিকে পরীক্ষা কেন্দ্র পর্যন্ত এসকর্ট করে নিয়ে যাওয়া-আসার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এতে খুশি হাতি উপদ্রব জঙ্গলমহলের ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকরা।
জানা গিয়েছে, হাতির যাতায়াতের জন্য জঙ্গলের যেসব রাস্তা আছে সেগুলো দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরাও যাতায়াত করে। সেই রাস্তাগুলিতে ঐরাবত গাড়ি নিয়ে বনকর্মীরা পাহারায় থাকবেন। জেলার জঙ্গল পথে সমস্যা বলতে মূলত হাতির উপদ্রব। চাঁদড়া রেঞ্জের আধিকারিক সুজিত পন্ডা জানিয়েছেন, " যে সমস্ত জঙ্গলপথ দিয়ে পরীক্ষার্থীরা যাতায়াত করে, সেই পথগুলিতে বনকর্মীরা থাকবেন। প্রয়োজনে বনকর্মীদের গাড়িতে করে জঙ্গল রাস্তা পার করে দেওয়া হবে। কলসিভাঙা থেকে চাঁদড়া এবং গুড়গুড়িপাল থেকে নয়াগ্রাম পর্যন্ত ঐরাবত গাড়ি থাকছে সমস্ত পরীক্ষার্থীদের এসকর্ট করে নিয়ে যাওয়া ও আসার জন্য। " পিড়াকাটা রেঞ্জের আধিকারিক মনোজিত শীট বলেন, " রঞ্জার জঙ্গলে বনকর্মীরা পাহারায় থাকবেন ঐরাবত গাড়ি নিয়ে। যাতে কোনরকম ভাবে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা না হয়। "
উল্লেখ্য, গতবছর জলপাইগুড়ির গাজলডোবা এলাকাতে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয় হাতির হানায়। মর্মান্তিক ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ। পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকার পরীক্ষার্থীদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার। তবে এবারে এখনও পর্যন্ত কোন নির্দেশিকা পাওয়া যায়নি।
বনদপ্তরের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। গুড়গুড়িপাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুভাষ হাজরা বলেন, " খুবই ভালো উদ্যোগ। সারা বছর এই এলাকায় হাতি থাকে। জমির ফসলের পাশাপাশি ঘরবাড়ি ভাঙার ঘটনাও ঘটেছে। জঙ্গল পথ পেরিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের। প্রশাসন থেকে গাড়ির ব্যবস্থা করলে খুবই ভালো হয়। "
তবে দল হাতি ছাড়াও বিশেষ মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দলছুট দাঁতাল। মাঝেমধ্যে জঙ্গল ছেড়ে রাস্তায় উঠে চলে আসে। মেদিনীপুর রেঞ্জে এখন পর্যন্ত কোন হাতির উপস্থিতি নেই। তাও জঙ্গলের বেশ কিছু এলাকায় পাহারায় থাকবেন বনকর্মীরা। রেঞ্জের আধিকারিক শান্তনু কুলভি বলেন, " এখন পর্যন্ত এই রেঞ্জ এলাকার জঙ্গলে হাতি নেই। তবে মাঝেমধ্যে দলছুট হাতি প্রবেশ করে। সেই দিক চিন্তা করে কয়েকটি জঙ্গল এলাকায় বনকর্মী মোতায়েন থাকবে। "