নিজস্ব সংবাদদাতা: বড়দিনের আনন্দে গোটা বিশ্ব মাতলেও, কিছু কিছু জনের জীবনে রয়ে গিয়েছে আক্ষেপ। পূরণ না হওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়েই চলছে তাঁদের জীবন। এমনই অবস্থা ডুয়ার্সের চা বাগানে। পাক্ষিক মজুরি না পেয়ে বিক্ষোভে সামিল হল শ্রমিকেরা। ডুয়ার্সের মাটিয়ালি ব্লকের কিলকোট চা বাগানের ঘটনা।
ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মজুরি না পেয়ে বাগানের ম্যানেজারের বাংলোতে গিয়েও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। রাত পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামে বিশাল পুলিশ বাহিনী। যদিও এ বিষয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, কিলকোট চা বাগানের শ্রমিকদের ২৩ ডিসেম্বর পাক্ষিক মজুরি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন বাগান কর্তৃপক্ষ সেই মজুরি না দিয়ে মঙ্গলবার মজুরি দেওয়ার কথা বলে। সেই অনুযায়ী এদিন বিকেল থেকেই শ্রমিকেরা মজুরি নেওয়ার জন্য বাগানের ফ্যাক্টরিতে আসে। কিন্তু বাগান ম্যানেজার অতুল রানা শ্রমিকদের জানায় সকল শ্রমিকদের মজুরি আসেনি তাই সকলকে দেওয়া যাবে না।
ম্যানেজারের এই কথা শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে পরেন শ্রমিকেরা। এরপর এদিন সন্ধায় প্রথমে বাগান ফ্যাক্টরি অফিসের সামনেই বিক্ষোভ সামিল হয় শ্রমিকেরা। পরে শ্রমিকরা যায় বাগান ম্যানেজারের বাংলোয়। ম্যানেজারের বাংলো ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শ্রমিকেরা।
খবর পেয়ে বাগানে পৌঁছায় মেটেলি থানার আইসি মিংমা লেপচা, মাল মহাকুমা পুলিশ আধিকারিক রোশন প্রদীপ দেশমুখ, মাটিয়ালি ব্লকের বিডিও অভিনন্দন ঘোষ সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ শ্রমিকদের ম্যানেজারের বাংলোতে ঢুকতে বাধা দেয়।
এরপরেও কিছু শ্রমিক বাংলোর ভিতরে ঢুকে পড়ে। পরে ম্যানেজারকে পুলিশি পাহারায় নিয়ে যাওয়া হয় বাংলোর দোতলায়। একই মালিকানাধীন মাটিয়ালি ব্লকের নাগেশ্বরী চা বাগানে মঙ্গলবার পাক্ষিক মজুরি দেওয়া হলেও কিলকোট চা বাগানে কেন দেওয়া হল না তা নিয়েই এদিন প্রশ্ন তোলেন শ্রমিকেরা।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১২ ডিসেম্বর পাক্ষিক মজুরি প্রদানের দাবিতে বিক্ষোভে সামিল হয় এই বাগানেরই শ্রমিকেরা। এরপর ১৪ ডিসেম্বর শ্রমিকদের পাক্ষিক মজুরি দেওয়া হয়।
প্রতিমাসের ৯ ও ২৩ তারিখে পাক্ষিক মজুরি দেওয়ার কথা বাগানের শ্রমিকদের। দীর্ঘক্ষণ ম্যানেজার বাংলায় বিক্ষোভ দেখানোর পর রাত প্রায় আটটা নাগাদ শ্রমিকরা বাংলো থেকে চলে যায়। বুধবার যাবতীয় বিষয় মেটেলি থানায় লিখিতভাবে জানানোর পাশাপাশি প্রয়োজনে চালসায় জাতীয় সড়কও অবরোধ হতে পারে বলে এদিন শ্রমিকরা হুমকি দিয়ে জানিয়েছেন।