নিজস্ব সংবাদদাতা: পর্যটনকেন্দ্র তাজপুরে রমরমিয়ে চলছে বেআইনি হোটেল নির্মাণ। প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা ও কোস্টাল রেগুলেটিং জোন আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, স্থানীয় প্রোমোটারদের দৌরাত্বে গড়ে উঠছে এই বেআইনি নির্মাণ। দিনের আলোতে কার্যত সমুদ্র চুরি করে অবৈধ নির্মাণ করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
প্রকাশ্য দিবালোকে সমুদ্রের জোয়ার ভাটার জায়গায় নির্মিত হচ্ছে কংক্রিটের গাড়োয়াল। গাড়োয়ালের উপর দিয়েই হচ্ছে জোয়ার ভাটা। কোথাও হোটেলের দেওয়ালে আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের জল। তো কোথাও সমুদ্র দেখার জন্যে অপেক্ষা করতে হচ্ছে পর্যটকদের। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্য দিবালোকে এই নির্মাণকার্য চলছে!
বেআইনি এই নির্মাণে অভিযান চালিয়ে মন্দারমনি উপকূলীয় থানা আটক করেছে দুজনকে। ২০১১ সালে দীঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ অর্থাৎ ডিএসডিএ-এর অন্তর্ভুক্ত হলেও বেআইনি নির্মাণের চিত্রটা মোটেও পাল্টায়নি।
২০১২ সালে প্রথম তাজপুরের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে, জেলা প্রশাসনকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন তাজপুরকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে। পাশাপাশি সতর্ক করেছিলেন তাজপুরের বেআইনি নির্মাণ নিয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে তাজপুরে ১৯টি হোটেল থাকলেও ২০১৪ সালের ৪টি বেআইনি হোটেল ভেঙে দেয় প্রশাসন। ২০১৭ সালে হোটেলের সংখ্যা ৩১টি থাকলেও এখন হোটেলের সংখ্যা প্রায় ১৫০-এর কাছাকাছি। পোস্টাল রেগুলেটিং জোনের আইনকে না মেনে, বঙ্গোপসাগরের উপকূল তাজপুর পর্যটন কেন্দ্রে নির্মাণ হচ্ছে একাধিক হোটেল।
/anm-bengali/media/media_files/2025/03/19/q25rfg-967505.png)
স্থানীয়দের দাবি বহিরাগত কিছু ধনী ব্যক্তি স্থানীয় ঠিকাদারদের সঙ্গে সংযোগ রেখে চালাচ্ছে এই বেআইনি নির্মাণ। রামনগর ১ ব্লকের ভূমি দপ্তরের পক্ষ থেকে এর আগে নোটিশ দিলেও বন্ধ হয়নি এই বেআইনি নির্মাণ।
তাজপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামল দাস এই অবৈধ নির্মাণের দায়ভার প্রশাসনের ঘাড়ে চাপিয়ে নিজে দায়মুক্ত হতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, “অবৈধ নির্মাণ দেখা অ্যাসোসিয়েশনের কাজ নয়, আমরা বারবার জানিয়েছি কেউ শোনেনি, প্রকাশ্য দিবালোকে মাসের পর মাস প্রশাসনের নাকের ডগায় এই অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে”। অতএব এই ভাবেই মন্দারমনির সৌন্দর্য্য হারিয়ে যাচ্ছে অবৈধ নির্মাণের ভিড়ে।