নিজস্ব সংবাদদাতা : পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতেই ব্যাপক অশান্তি ছড়িয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। রবিবার মতুয়া গড়ে ঠাকুরনগরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়। এমনকি ঠাকুরবাড়িতেও ঘটে অশান্তির ঘটনা। যার জেরে অভিষেক পৌঁছনোর আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মূল মন্দিরের দরজা। অল ইন্ডিয়া মতুয়া সঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর বনাম তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে কার্যত অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার আঁচ পৌঁছোয় হাসপাতাল পর্যন্ত। এদিকে, তৃণমূল ঠাকুরবাড়ির দখল নিতে গিয়েছিল বলে সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার কথায়, “তৃণমূল কর্মীরা যেভাবে মতুয়াদের মন্দিরে ঝাণ্ডা নিয়ে ঢুকে জোর করে ঠাকুরবাড়ির দখল নিতে গিয়েছিল তা অত্যন্ত নিন্দনীয়”। তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ''এর আগে মতুয়াদের কাছে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি কখনোই ঠাকুরবাড়িতে ঝাণ্ডা নিয়ে প্রবেশ করনি।'' মন্দিরে প্রবেশ করার আগে শাসকদলের ঠাকুরবাড়ি থেকে লিখিত অনুমোদন নেওয়া উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন শুভেন্দু।
গণ্ডগোলের মাঝে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে সুর চড়িয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “একজন লোকসভার সাংসদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। তার কি পরিণতি তা পুলিশ বুঝতে পারবে”। অন্যদিকে, শান্তনুকে ভোটে হারিয়ে দেবেন বলে যে গর্জন করেন অভিষেক তার প্রেক্ষিতে শুভেন্দু বলেন, ''উনি যাকে হারিয়ে দেবেন বলেছেন আজ পর্যন্ত, সেই জিতে গেছে। '' এরপর সাগরদিঘি উপনির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ''সাগরদিঘির মতো ভোট হলে তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।'' প্রসঙ্গত, সাগরদিঘিতে ধরাশায়ী অবস্থা হয়েছিল রাজ্যের শাসসদলের। জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল কংগ্রেস। এমনকি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মীয়ও বিপুল ভোটে পরাজিত হন জয়ী প্রার্থীর কাছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন যেমন সামনেই, এরপরে রয়েছে লোকসভা নির্বাচনও। অভিষেকের সাংসদ এলাকা ডায়মন্ডহারবার নিয়েও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন শুভেন্দু। বলেন যে ডায়মন্ডহারবারে তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয় স্থানে থাকবে। মূল লড়াই হবে বিজেপির সঙ্গে নওশাদ সিদ্দিকির। নওশাদকে ইতিমধ্যেই নিজের সাংসদ এলাকায় স্বাগত জানিয়েছেন অভিষেক। রাজনৈতিক লড়াই চলছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে শাসক-বিরোধীরা। তারপরেই লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হবে। রাজ্য রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতিতে ক্রমে চরছে পারদ।